বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফাটল মসজিদেই ২ সহস্রাধিক মুসল্লির জুমা আদায়

  •    
  • ৪ মার্চ, ২০২২ ২০:৪২

সরেজমিন দেখা যায়, জুমার নামাজের জন্য আজানের আগে থেকেই সাইকেল, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কারে করে জেলা-উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ দলে দলে জড়ো হচ্ছেন। এভাবে ধীরে ধীরে কানায় কানায় ভরে ওঠে মসজিদ প্রাঙ্গণ।

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা চত্বরে উদ্বোধনের আট মাসের মাথায় ফাটল ধরা সেই মডেল মসজিদটিতে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আতঙ্ক আর জল্পনা-কল্পনা থাকলেও শুক্রবার জেলার প্রত্যেকটি উপজেলা থেকে দলে দলে মুসল্লিরা এসে জড়ো হন মসজিদটিতে। স্থানীয় মুসল্লিরাও সেখানে নামাজ আদায় করেন। পুরুষের পাশাপাশি মসজিদের তৃতীয় তলায় নামাজ আদায় করেন নারীরাও।

সরেজমিন দেখা যায়, জুমার নামাজের জন্য আজানের আগে থেকেই সাইকেল, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কারে করে জেলা-উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ দলে দলে জড়ো হচ্ছেন। এভাবে ধীরে ধীরে কানায় কানায় ভরে ওঠে মসজিদ প্রাঙ্গণ। আতঙ্ক থাকলেও উৎসবমুখর পরিবেশে প্রথমবারের মতো মডেল মসজিদটিতে জুমার নামাজ আদায় করেন তারা।

এ সময় শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ, নারীসহ দুই হাজারের বেশি মানুষ মসজিদটিতে নামাজ আদায় করেন। নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে জেলার উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরও।

নামাজ আদায় শেষে স্থানীয় মজিবর রহমান বলেন, ‘মসজিদটিতে ফাটলের বিষয়ে আতঙ্ক ছড়ানোটাই স্বাভাবিক। আমিও আতঙ্কিত ছিলাম। কিন্তু ইঞ্জিনিয়াররা পরিদর্শন করে যেভাবে মানুষকে সাহস দিয়েছেন, তাতে আর ভয় লাগছে না। আমরা গ্রামের সহজ-সরল মানুষ। বিশ্বাস নিয়ে চলি। মসজিদটি সব সময় এমন ভরপুর থাকবে, এটাই প্রত্যাশা করি।’

মুনতাসিম রহমান বলেন, ‘এত মানুষের ভিড়ে নামাজ আদায় করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। নিরাপত্তার সঙ্গেই নামাজ আদায় করেছি। ইসলামি বয়ান, খুতবা, সুরা-কিরাত সবকিছু মিলিয়ে মনে হয়েছে অন্যরকম একটা পরিবেশে নামাজ আদায় করছি।’

অপেক্ষাকৃত তরুণ রিয়াদুল চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল জানতে পেরেছি মডেল মসজিদে জুমার নামাজ আদায় হবে। তাই সকাল থেকে আমরা মসজিদে আসার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। নামাজ আদায় করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। আশা করি, পাঁচ ওয়াক্তই মসজিদটিতে এভাবে নামাজ আদায় হবে।’

গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী কে এম নুরুল হাসান বলেন, ‘মসজিদের ফাটলের যে বিষয়টি ছিল, সেটি সামান্য ত্রুটি। আমি বারবার বলেছিলাম, এটিতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আজ মসজিদে দুই হাজারের বেশি মানুষ নামাজ আদায় করেছে। উৎসবমুখর পরিবেশে জুমার নামাজ আদায় হলো। খুব ভালো লাগছে যে মানুষ তাদের ভেতরের আতঙ্ককে জয় করে মসজিদে এসেছে।’

হস্তান্তরের আগেই নামাজ আদায়ের কারণ জানাতে তিনি বলেন, ‘গতকাল মসজিদটিতে পরিদর্শন করতে এসেছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল কাসেম মোহাম্মদ শাহীন। তিনি সবকিছু তদন্ত করে দেখবেন। তবে তিনি অনুমতি দিয়েছিলেন যেন আজ মসজিদে জুমা থেকে নামাজ আদায় করা হয়। তাই আমরা নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদটি পরিষ্কার করেছি এবং মুসল্লিদের যেন কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য নিরাপত্তা জোরদার করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মসজিদে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এত মানুষ এসেছে যে, সাইকেল ও মোটরসাইকেলের জন্য নির্ধারিত গ্যারেজেও জায়গা দিতে পারিনি।’

এদিকে যেসব স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে, সেগুলো প্রকৌশলশৈলী ঠিক করে মেরামত করা হচ্ছে বলে জানান এই প্রকৌশলী।

হরিপুর মডেল মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করে জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘মডেল মসজিদের মাধ্যমে ইসলামের সঠিক চর্চা করতে হবে। ইসলামের সঠিক জ্ঞান অর্জন করে বিভিন্ন ধর্মীয় অপপ্রচার প্রতিরোধ করতে হবে।’

এ সময় তিনি সব নারী-পুরুষকে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আসারও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এখানে ইসলামিক লাইব্রেরি আছে। এখানে আমরা সবাই ধর্মীয় চর্চা এবং জ্ঞান অর্জন করতে পারব।’

সেই সঙ্গে সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি।

মুফতি মাসুদুর রহমান হামিদীর ইমামতিতে সেই মসজিদের জুমার নামাজ আদায় করেন সদর উপজেলার ইউএনও আব্দুল করিম, উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান মুকুলসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাও।

এ বিভাগের আরো খবর