যুদ্ধক্ষেত্র ইউক্রেন থেকে প্রতিবেশী পোল্যান্ডে পৌঁছেছেন ৬০০ বাংলাদেশি। তবে এখনও ৩০০ জন ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়ে আছেন বলে জানতে পেরেছে পোল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস।
তবে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউক্রেন থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে পোল্যান্ডে পৌঁছেছেন ছয় শতাধিক বাংলাদেশি। শতাধিক বাংলাদেশি এখনও ইউক্রেনে থাকতে পারেন।’
শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মাসুদ বিন মোমেন আরও বলেন, ‘ইউক্রেনে যারা এখন আছেন, তাদের বেশির ভাগেরই সেখানে ফ্যামিলি আছে। তারা হয়তো ইউক্রেন ছাড়বেন না।’
‘ইউক্রেনে কিছু পকেট আছে, সেখানে বাংলাদেশি থাকতে পারেন। আমরা সেখানকার ভারতীয় দূতাবাসকে অনুরোধ জানিয়েছি, ভারতীয়দের উদ্ধারের সময় বাংলাদেশি সেখানে যদি থাকেন, তাহলে তাদেরও যেন সঙ্গে নেন।’
যুদ্ধের ফলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার ফলে ফুল রেঞ্জে কী প্রভাব পড়বে, সেটা নিয়ে আলোচনা করছি। আমরা এটা নিয়ে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে কথা বলছি। এটা নিয়ে আরও বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
তবে এখনই কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানান তিনি।
এদিকে পোল্যান্ড থেকে বাংলাদেশি এক দূতাবাসকর্মী নিউজবাংলাকে জানান, ইউক্রেনে এখনও আটকে রয়েছেন প্রায় ৩০০ বাংলাদেশি। ইউক্রেন থেকে প্রতিবেশী ইউরোপীয় দেশগুলোয় পালিয়ে আসার চেষ্টা করছেন তারা।
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা পোল্যান্ড-ইউক্রেন সীমান্তে আছি। আমরা বাংলাদেশি নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়তে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।’
পোল্যান্ডে পৌঁছানো বেশির ভাগ বাংলাদেশি তাদের নিজস্ব গন্তব্যে চলে গেছেন। এর বাইরে কিছুসংখ্যক অভিবাসী বাংলাদেশি দূতাবাসের ব্যবস্থা করা ডরমেটরিতে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে দূতাবাস।
দূতাবাস সূত্র জানায়, হেঁটে দূর-দূরান্ত থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসা বাংলাদেশিদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডের মেডিকা সীমান্তে আসা বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস৷ পাশাপাশি পোল্যান্ডে অবস্থানরত বাংলাদেশিরাও স্বদেশিদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন৷
পোল্যান্ডের বাংলাদেশি দূতাবাস ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে প্রবেশকারী বাংলাদেশি অভিবাসীদের উদ্দেশে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছে।
পোস্টে বলা হয়, ‘মেডিকা বর্ডার থেকে শেমিশেল শহরে নিয়মিত শাটল বাস চলছে। যারা বর্ডার পার হয়ে ঢুকছেন, তারা খাবার ও পানি খেয়ে অনুগ্রহ করে দ্রুত শাটল বাসে করে শেমিশেল শহরে চলে যাবেন। সেখান থেকে ট্রেনে করে ওয়ারশ যেতে পারবেন। আবার সেখানে পোল্যান্ড সরকারের শেল্টার হাউস আছে, যেখানে অল্প সময়ের জন্য থাকা যাবে।’
ইউক্রেনে বর্তমানে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস বা কনস্যুলেট নেই। পোল্যান্ডের বাংলাদেশি দূতাবাস ইউক্রেনের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগে কাজ করে থাকে।