মাসখানেক পরই রমজান। তার আগেই বাজারে শুরু হয়েছে ভোজ্যতেলের ভুতুড়ে সংকট। দাম বাড়ানোর অনুমতি না পেয়ে বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা ঠিকই ভোক্তাদের কাছ থেকে বেশি টাকা আদায় করছেন।
খুচরা বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাহিদামতো তেল পাওয়া যাচ্ছে না।
পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, মিল থেকে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না।
ভোজ্যতেলের এমন কৃত্রিম সংকট নিয়ে বৈঠক করে সরবরাহ গরমিলের অভিযোগ এনে ব্যবসায়ীদের ওপর ক্ষেপেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
এমন অবস্থায় ভোজ্যতেলের সরবরাহের সঠিক হিসাব বের করতে আমদানি ও পরিশোধনকারী (রিফাইনারি) সব কোম্পানিকে গত তিন মাসের বিপণন তথ্য তলব করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের এক সূত্র জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার এই বিপণন তথ্য চেয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে সব রিফাইনারির কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে।
ওই চিঠিতে প্রত্যেক রিফাইনারির কাছে ভোজ্যতেলের গত তিন মাসে কী পরিমাণ আমদানি করেছে, কী পরিমাণ রিফাইন করেছে সে তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে রিফাইন করা ভোজ্যতেলের কী পরিমাণ ডিও বা এসও দিয়েছে, কী পরিমাণ ডেলিভারি করেছে, কত মজুত আছে তা কাস্টমস পেপারসহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে জমা দিতে বলো হয়।
আগামী সোমবারের মধ্যে চাহিদার সব তথ্য জমা দেয়ার সময় বেঁধে দেয়া হয় চিঠিতে।
ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা ১ মার্চ থেকে লিটারে সয়াবিন তেলের দাম ১২ টাকা বাড়ানোর চেষ্টা করেছিল। তবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সাফ জানিয়ে দেন, রোজার আগে দাম বাড়বে না। তিনি আন্তর্জাতিক বাজারের বাড়তি দামের উত্তাপ সহ্য করতে ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দেন।
এর পরই ব্যবসায়ীরা বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। অবশ্য সরবরাহ কমানোর বিষয়টি রিফাইনারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলছেন, তাদের সরবরাহ আগের মতোই রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও আমদানি) এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এসব তথ্য পাওয়া গেলে তেল নিয়ে তেলেসমাতি কারা করছে ধরা পড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তথ্য পাওয়ার পর প্রতিটি রিফাইনারিতে ভোক্তা অধিকার অভিযান চালাবে। অভিযানে মজুতের জব্দ ও আইনানুগ জরিমানাসহ কঠোর পদক্ষেপে যাবে সরকার।’
বাজার পর্যায়ে সারা দেশে অভিযান এখন চলমান বলে জানান ওই কর্মকর্তা। সফিকুজ্জামান বলেন, ‘অপরাধ প্রমাণ হওয়ামাত্র দোষী ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। শিগগিরই দেশে ভোজ্যতেলের বাজার স্বাভাবিক হবে।’