ঝিনাইদহের ৬ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়োগ থাকলেও সেবা দিতে যান না চিকিৎসকরা। কাগজে-কলমে পদায়ন থাকলেও চেনেন না ওই কেন্দ্রের অন্য কর্মকর্তারাও। এভাবেই চলছে ঝিনাইদহের ১৩ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
এতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। গ্রাম থেকে সেবা নিতে ছুটতে হয় উপজেলা বা জেলা হাসপাতালে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে শৈলকুপায় দুটি, কালীগঞ্জে দুটি, কোটচাঁদপুরে তিনটি ও মহেশপুর উপজেলায় রয়েছে চারটি। সেগুলো হলো- সদরের হরিশংকরপুর, সাধুহাটি, শৈলকুপার কচুয়া, আবাইপুর, কালীগঞ্জে বারোবাজার, কোলাবাজার, কোটচাঁদপুরের পাঁচলিয়া, তালসার, জয়দিয়া ও মহেশপুরের মান্দারবাড়িয়া, যাদবপুর, তালসার ও শ্যামকুড় ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
জেলা সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কচুয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ২০২০ সালে আকাশ আহম্মেদ আলী নামের এক চিকিৎসকের পদায়ন দেয়া হলেও তিনি সেবা দিতে সেখানে যান না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা দেন।
এ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণে জমিদাতা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘শুনেছি এখানে একজন ভালো ডাক্তারের পোস্টিং আছে। তিনি এখানে আসেন না। প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী আসেন সেবা নিতে। ডাক্তার না থাকায় ভালো সেবা পাচ্ছেন না এই এলাকার লোকজন।’
একইভাবে শৈলকুপার আবাইপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ২০১৯ সালে নিয়োগ দেয়া হয় নুসরাতকে। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও ওই এলাকার মানুষ কোনো দিন দেখেননি তাকে।
সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার আসেন না। একজন অফিস সহায়ক সেখানে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন।
শৈলকুপার আবাইপুর উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা নিতে আসা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা এখানে এসে একজনকে দেখি। শুধু ঠান্ডা আর জ্বরের ওষুধ দিয়ে চলে যান। ভালো ডাক্তার নাকি এখানে আছে, কিন্তু কোনো দিন তো তার মুখ দেখিনি।’
একই অবস্থা জেলার অন্য উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতেও। নিয়োগ থাকলেও নানা অজুহাতে উপজেলা বা সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনে কাজ করছেন তারা। করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে তারা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাননি।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, ‘করোনার কারণে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো থেকে ডাক্তার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সদর হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের স্ব স্ব স্থানে ফেরত পাঠানো হবে।’