বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যদি বাইরে এসে গাড়ির মধ্যে বসে শুধু হাত দেখান, তাহলেই সরকারের তখ্ত (আসন) উল্টে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘সরকার খালেদা জিয়াকে ভয় পায় বলেই ছেড়ে দিচ্ছে না। আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাদের কথা শুনবেন এবং খালেদা জিয়া বের হবেন।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শুক্রবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম মজনুরের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রেস ক্লাবের সামনে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
এর আগে সমাবেশ ঘিরে সকাল থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন। এ সময় পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়।
সমাবেশ আগামী দিনে সংগ্রাম করতে প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে বলে উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব।
ফখরুল বলেন, ‘সরকার আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। কারণ, যদি তিনি যদি বাইরে আসেন, গাড়ির মধ্যে বসে শুধু হাত দেখান তাহলে এ দেশের মানুষকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। সরকারের তখ্ত উল্টে ফেলে দেবে।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শুক্রবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম মজনুরের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে দলটির নেতা-কর্মীরা। ছবি: সাইফুল ইসলাম
সরকারের উদ্দেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘সাহস থাকে খালেদা জিয়াকে ছেড়ে দেন না! সাহস থাকে তাকে বাইরে আসতে দেন।
‘তার চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেন না। কারণ এভাবেই যদি চলে যায়, তাহলে তো আপনাদের আর কোনো কাঁটা থাকল না। কিন্তু আল্লাহ মেহেরবান, তিনি প্রত্যেকের কথা শুনছেন। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য দোয়া করছেন, রোজা রাখছেন আমাদের মা-বোনেরা। আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাদের কথা শুনবেন এবং খালেদা জিয়া বের হবেন।’
ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নাই।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। ক্ষমতায় আসার আগে তারা বলেছিল, ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে, বিনা পয়সায় সার দেবে, ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। একটাও পালন করেছে? কিন্তু কী করেছে, এখন ৭০ টাকা চালের দাম। সারের দাম প্রায় ১০০ গুণ বেশি। আর চাকরি পেতে হলে আওয়ামী লীগের সিল ছাড়া তো চাকরি পাওয়া যায়ই না। উপরন্তু কমপক্ষে ২০ লাখ টাকা দিতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘রফিকুল ইসলাম মজনুকে আটক করেছে কারণ সে একজন জনপ্রিয় নেতা।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, বিএনপি কান কাটা। আমাদের যদি কান কাটা হয় তাহলে আপনাদের তো দুই কান কাটা। আপনারা তো রাস্তা দিয়ে চলতে সাহস পান না।’
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার ভাইয়েরা এটা কি আপনাদের ওপরে প্রযোজ্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের কারণে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। পত্রিকায় দেখলাম এক মন্ত্রী বলেছেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি আর মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়া এক কথা নয়। মন্ত্রী সাহেব আপনাকে এই জিনিসটি আগে শিখতে হবে। আর যদি ক্রয়ক্ষমতা বেড়েই থাকে সেটা বেড়েছে আওয়ামী লীগ নেতাদের, সাধারণ মানুষের না।’