চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে মাধ্যমিকে পুরোদমে ক্লাস শুরুর বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
রাজধানীর বনানীর হোটেল রেনেসাঁয় শুক্রবার ‘স্টাডি ইন ইন্ডিয়া: এডুকেশন ফেয়ার’-এর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আশা করছি এ মাসের মাঝামাঝি থেকেই মাধ্যমিকে পুরোদমে ক্লাস শুরু করতে পারব।’
পুরোদমে ক্লাস শুরু হলে অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম চলবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে যেখানে হয়তো কেউ আসতে পারছে না, তাদেরকে হয়তো কিছুটা দিতে চেষ্টা করব।’
ব্লেন্ডেড এডুকেশন সিস্টেম প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন আমরা এর ন্যাশনাল পলিসি করছি। এ মাসের ২৬ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে এর পলিসিটা দেয়ার কথা। এর জন্য আমাদের অনেক ধরনের প্রস্তুতিও দরকার।
‘ব্লেন্ডেড এডুকেশন সিস্টেম চালু করতে হলে আমাদের সকল ক্লাস রুমকে তৈরি করতে হবে এবং শিক্ষকদের আরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে।’
সশরীরে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি এবং অনলাইন বা অনসাইট শিক্ষাসংক্রান্ত বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীদের বোঝানো ও তাদের মধ্যে প্রদর্শন করার মাধ্যমে পাঠদান করার পদ্ধতিকে ব্লেন্ডেড এডুকেশন বলা হয়।
এইচএসসির পুরো সিলেবাসে মেডিক্যালের ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার উদ্যোগ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দীপু মনি বলেন, ‘যেখানে আমরা পুনর্বিন্যাস করে এইচএসসি পরীক্ষা নিয়েছি সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ভর্তি পরীক্ষাটাও সেই পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসেই হওয়া উচিত। সেটাই যৌক্তিক।
‘আমি ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিএমডিসির প্রধান এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সচিবের সঙ্গে আলাপ করেছি। তারা বলেছেন, বিষয়টি দেখবেন।’
এর আগে গত ২ মার্চ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ বলেছিলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে আশা করছি আগামী সপ্তাহ থেকে স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক ক্লাস শুরুর ঘোষণা দেয়া হবে।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর সপ্তাহে প্রতিদিন ক্লাস করছেন এসএসসি পরীক্ষার্থী ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, তবে তাদের সব বিষয়ের ক্লাস হচ্ছে না। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের চারটি এবং দশম শ্রেণিতে তিনটি বিষয়ে ক্লাস হচ্ছে।
এ ছাড়া অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে সপ্তাহে দুই দিন তিন বিষয়ে এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে এক দিন তিন বিষয়ের ক্লাস হচ্ছে।
২০২০ সালের মার্চে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয় দুই দফায়। প্রথম দফায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনের বন্ধ দুয়ার।
সশরীরে ক্লাস শুরুতে চালু হয় মাধ্যমিক স্কুলে। এরপর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে। সবার পর সশরীরে ক্লাস শুরু হয় প্রাথমিকে।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে দ্বিতীয় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে দেয়া হয় গত ২১ জানুয়ারি। এ দফায় শিক্ষাঙ্গনে সশরীরে ক্লাস বন্ধ থাকে এক মাস।
২২ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে। আর বুধবার থেকে আবারও শুরু হয় প্রাথমিকে সশরীরে ক্লাস।