বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সুপ্রিম কোর্ট বারে তানিয়া আমীর-যুথীর ‘বিদ্রোহ’

  •    
  • ৩ মার্চ, ২০২২ ২১:৫৬

প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলামের মেয়ে তানিয়া আমির। অন্যদিকে যুথী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী। তারা দুজন সরকার সমর্থক সাদা প্যানেলের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন যথাক্রমে সভাপতি ও সম্পাদক হিসেবে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২২-২৩ সেশনের নির্বাচনে আওয়ামী সমর্থিত সাদা প্যানেলের বাইরে গিয়ে সভাপতি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ক্ষমতাসীন দল সমর্থক আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন নাহিদ সুলতানা যুথী, তিনিও আওয়ামী ঘরানার আইনজীবী।

বৃহস্পতিবার এ দুই প্রার্থী নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুজনই বলেছেন, আইনজীবী সমিতির মর্যাদা রক্ষায় তারা ভোটে নেমেছেন। এদের মধ্যে যুথী আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের প্যানেল থেকে সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। তবে তানিয়া আমীর মনোনয়ন চাননি।

আওয়ামী সমর্থিত সাদা প্যানেলের বাইরে গিয়ে এই দুই আইনজীবী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে প্রার্থীদের তালিকাও প্রকাশ করেছে।

প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলামের মেয়ে তানিয়া আমীর।

জনাব আমীর আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য। তবে ১৯৯১ সালের পর জাতীয় নির্বাচনে আর মনোনয়ন পাননি। তিনি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন।

অন্যদিকে যুথী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী।

মনোনয়ন ঘোষণা করা বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন এই দুই নারী আইনজীবীর সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন।

কেউ যদি দলে থাকে, সেটা মানবে। আর যদি কেউ অমান্য করে, তাহলে সেটা হতেই পারে, করলে কী করবেন আপনি? কিছু করার নেই। তবে দল যদি করে, দলকে যদি ভালোবাসে, নীতি-আদর্শ ভালোবাসে, তাহলে সেটা তার মাথায় রাখতে হবে, পার্টির নমিনেশন: ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন

বারের মর্যাদা ফেরাতে ভোটে: তানিয়া আমীর

তানিয়া আমীর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সম্ভবত এই প্রথম সভাপতি পদে একজন নারী প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছি। নির্বাচনে অবশ্যই বিজয় হবে- এমনটাই প্রত্যাশা করছি।’

দল সমর্থিত প্যানেলের বাইরে গিয়ে কেন আলাদা প্রার্থী হলেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির হারানো মর্যাদা ফিরিয়ে আনতেই মূলত নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। সুপ্রিম কোর্ট বারে এমনও অনেকের নাম রয়েছে, যাদের সদস্যপদ স্থগিত আছে, অনেকেই অযোগ্য অথচ ভোটার তালিকায় তাদের নাম রয়েছে। ভোটার তালিকা থেকে এসব ব্যক্তির নাম ফেলে দিতে হবে।’

‘অনেকেই আছেন যারা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটার না, অনেকেই আছেন তারা ঢাকা বারের সদস্য, অথচ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে কারা নির্বাচন করবেন, তারা নির্ধারণ করে দেন। এটা হতে পারে না: তানিয়া আমীর’

আগামী ১৫ ও ১৬ মার্চ দুই দিনব্যাপী আইনজীবী সমিতির ভোট হবে। নির্বাচনে সরকার সমর্থক বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সাদা প্যানেল থেকে সভাপতি পদে সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক পদে আবদুন নুর দুলালকে প্রার্থী করা হয়েছে।

তানিয়া আমীরের অভিযোগ, যে প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে, সেটি জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে করা হয়নি।

তিনি বলেন, ‘অনেকেই আছেন যারা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটার না, অনেকেই আছেন তারা ঢাকা বারের সদস্য, অথচ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে কারা নির্বাচন করবেন, তারা নির্ধারণ করে দেন। এটা হতে পারে না।’

সম্পাদক পদে মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছিলাম। আলোচনা করে সমঝোতার ভিত্তিতে আমাকে না দিলেও কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু আলোচনায় ওঠার আগেই আমার নামটা কেটে দেয়া হয়েছে। এটাতে আমার মনে হয়েছে আমার অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে: যুথী

তানিয়ার আরও অভিযোগ, ‘যারা প্যানেল গঠন করে দিয়েছেন তারা এখানকার ভোটার না। অনেকের সরকারি পদে থাকায় তার ভোটার স্থগিত করা আছে। অথচ তারা নির্ধারণ করে দিচ্ছেন, এখানে কারা নির্বাচন করবেন। এটা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা মেনে নিচ্ছেন না। এ কারণেই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি।’

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আশা করছি ভোটারদের অভূতপূর্ব সাড়া পাব। নির্বাচিত হয়ে সুপ্রিম কোর্ট বারের মর্যাদাকে আরও উঁচু জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। যার ফলে আইনজীবীরা এটাকে নিয়ে গর্ববোধ করবেন।’

আলোচনা না করে নাম কাটায় ক্ষুব্ধ যুথী

আওয়ামী সমর্থিত একজন আইনজীবী হয়েও কেন আওয়ামী সমর্থিত প্যানেলে বাইরে গিয়ে প্রার্থী হয়েছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে যুবলীগ চেয়ারম্যানের স্ত্রী বলেন, ‘আমি এবারের নির্বাচনে সম্পাদক পদে মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছিলাম। আলোচনা করে সমঝোতার ভিত্তিতে আমাকে না দিলেও কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু আলোচনায় ওঠার আগেই আমার নামটা কেটে দেয়া হয়েছে। এটাতে আমার মনে হয়েছে আমার অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।

‘অথচ সিনিয়র আইনজীবী ও আইনজীবী নেতৃবৃন্দ আমাকে চায়। তাদের কাছে আমি দায়বদ্ধ। সে জন্য আমি প্রার্থী হয়েছি। বড় কোনো ষড়যন্ত্র না হলে আশা করি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।’

‘কেউ দলের আদর্শ না মানলে কী করার আছে’

আওয়ামী লীগ সমর্থকদের প্যানেলের বিপরীতে দল সমর্থক দুই আইনজীবীর প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন সরকার সমর্থক আইনজীবীদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘নমিনেশনটা হয়েছে পরিষদের পক্ষ থেকে। যারা রেগুলার মেম্বার, তারাই এলিজেবল টু ফাইল অ্যাপ্লিকেশন। এই হলো ব্যাপার। কেউ যদি দলে থাকে, সেটা মানবে। আর যদি কেউ অমান্য করে, তাহলে সেটা হতেই পারে, করলে কী করবেন আপনি? কিছু করার নেই। তবে দল যদি করে, দলকে যদি ভালোবাসে, নীতি-আদর্শ ভালোবাসে, তাহলে সেটা তার মাথায় রাখতে হবে, পার্টির নমিনেশন।’

বিএনপিতে ঐক্য

এই নির্বাচনে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে অবশ্য কোনো বিভক্তি নেই।

তাদের নীল প্যানেল থেকে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল। সম্পাদক পদে লড়বেন বর্তমান সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল।

নির্বাচনে গত কয়েকবারের মতো স্বতন্ত্র সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন ইউনুছ আলী আকন্দ।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটির সভাপতি পদে একটি, সহসভাপতি পদে দুটি, সম্পাদক পদে একটি, কোষাধ্যক্ষ পদে একটি, সহসম্পাদক পদে দুটি এবং কার্যকরী কমিটির সদস্য পদে সাতটি পদসহ সর্বমোট ১৪টি পদে ভোট হবে।

এর মধ্যে কার্যকরী কমিটির সাতটি সদস্য পদের ভোট গণনা ডিজিটাল পদ্ধতিতে হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটির প্রধান এ ওয়াই মশিউজ্জামান।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির গত নির্বাচনে সভাপতি পদসহ আটটি পদে জয় পেয়েছিল সরকার সমর্থক সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ।

অন্যদিকে সম্পাদক পদসহ ছয়টি পদে জয় পেয়েছিল বিএনপি সমর্থক জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল।

এ বিভাগের আরো খবর