করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসা এখন সময়ের ব্যাপার। প্রতিদিনই পরিস্থিতি উন্নত হতে থাকার মধ্যে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার এবার নেমেছে ৩ শতাংশের নিচে।
গত বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত যত করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তার মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়েছে ২ দশিমক ৯১ শতাংশ। আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
শনাক্তের এই হার গত ১ জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন। সেদিন পরীক্ষা বিবেচনা শনাক্তের হার ছিল ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
এ নিয়ে টানা ছয় দিন পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকল, যা করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী টানা ১৪ দিন তা ৫ শতাংশের নিচে থাকলে করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।
শনাক্তের হারের পাশাপাশি রোগীর সংখ্যা এবং মৃত্যুর দিক থেকেও উন্নতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী পাওয়া গেছে ৬৫৭ জন, যা আগের দিন ছিল ৭৩২ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৯ জেলায় কোনো রোগী পাওয়া যায়নি।
রোগীর এই সংখ্যা গত ৩ জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন। সেদিন ৬৭৪ জনের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল।
সব মিলিয়ে ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন ১৯ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৮ লাখ ৩১ হাজার ৫৭৭ জন।
গত ২৫ ঘণ্টায় দেশে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, যা আগের ২৪ ঘণ্টায় ছিল আটজন।
সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মারা গেছেন ২৯ হাজার ৫৮ জন।
এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পুরুষ এক ও নারী চারজন। এদের সবাই ঢাকা বিভাগের।
গত ২০ জানুয়ারি করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর আরও আট দিন সংক্রমণ ছিল ঊর্ধ্বগামী। ২৮ জানুয়ারি শনাক্তের হার রেকর্ড গড়ার পরদিন থেকেই তা নিচের দিকে নামতে থাকে।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায় প্রথমবারের মতো। একপর্যায়ে পরীক্ষার বিবেচনায় রোগীর অনুপাত ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
২০২১ সালের শুরুর দিকে করোনার এই ঢেউ নিয়ন্ত্রণে এলেও মার্চে আবার দ্বিতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে। সেটি নিয়ন্ত্রণে আসে অক্টোবরের শুরুতে। তখন থেকে চলতি বছরের শুরু পর্যন্ত পরিস্থিতি ছিল নিয়ন্ত্রণে।
তবে গত ৭ জানুয়ারি সংক্রমণের হার আবার ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে তৃতীয় ঢেউ ছড়ানোর প্রাথমিক প্রমাণ মেলে। সেখান থেকে টানা প্রায় তিন সপ্তাহ বাড়ে সংক্রমণ।
করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় গত মাসে স্কুল, কলেজে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের সশরীরে ক্লাস শুরু হয়েছে। বুধবার প্রাথমিকেও ক্লাস শুরু হলো। তবে এখনও অপেক্ষায় থাকতে হবে প্রাক-প্রাথমিকে। চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ছোট্টমণিদেরও সশরীরে ক্লাস শুরু হতে পারে।