বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খুলনা বইমেলায় তারুণ্যের ভিড়, কেনাবেচা কম

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৩ মার্চ, ২০২২ ১২:৩৭

খুলনা বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের উপপরিচালক ড. আহছান উল্যাহ বলেন, ‘বইমেলায় মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসছে। এখানে বইয়ের পাশাপাশি খাবার ও কুটির শিল্পের স্টলও রয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় নানা রকমের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।’

তরুণ-তরুণীরা ঘুরছে বাহারি রঙের পোশাক পরে। কারো কারো মাথায় শোভা পাচ্ছে ফুলের ব্যান্ড। কারো হাতে প্রিয় মানুষের কাছ থেকে পাওয়া উপহার ফুলের তোড়া। কেউ কেউ ছবি তুলছেন, কেউবা আবার পছন্দের লেখকের বই কিনতে খুঁজে বেড়াচ্ছেন নির্ধারিত স্টল।

খুলনায় অমর একুশে বইমেলায় বুধবার সন্ধ্যায় ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

বন্ধুকে নিয়ে বইমেলায় এসেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নুসরাত আজমেরী। তিনি বলেন, ‘আজকের দিন ধরে আমি তৃতীয়বারের মতো এ বছর বইমেলায় আসলাম। একবার এসেছি পরিবাবের সঙ্গে। বাকি দুই বার এসেছি বন্ধুদের সঙ্গে।’

নুসরাত বলেন, ‘বিকেলে বাইরে কোথাও ঘুরতে না গিয়ে বইমেলায় আসা বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। এখানে এলে খালি হাতে যাই না, একটি-দুটি বই কিনে নিয়ে যাই।’

রোমাঞ্চকর বই পড়তে বেশ ভালো লাগে বলেও জানান নুসরাত।

আরেক শিক্ষার্থী রাইসা বলেন, ‘আমি কয়েকবার এখানে এসেছি। বন্ধুদের সঙ্গে এসে ঘুরে যাচ্ছি। এখনো পছন্দের কোনো বই কেনা হয়নি। মেলার শেষের দিকে বই কিনব।’

ছোট মেয়ে আইরাকে নিয়ে মেলায় এসেছেন কানিজ ফাতিমা। বলেন, ‘আমার মেয়ের বয়স মাত্র ৯ বছর। তাকে মেলায় নিয়েছি, যাতে বইয়ের ওপর আগ্রহ বাড়ে।

‘তাকে আমি পাঁচটি বই কিনে দিয়েছি। কয়েক দিন পর আবারও নিয়ে আসব। আরও বই কিনে দেবো।’

সপরিবারে বইমেলায় এসেছেন কবীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের আবদার মেটাতে এখানে এসেছি। তারা প্রতিদিনই বায়না করছে। তাই না নিয়ে এসে পারলাম না।’

ছেলেমেয়েরা বইমেলায় আসছে, এটা আমার খুবই ভালো লাগছে। আমি আগে কখনও বইমেলায় এত বেশি কিশোর বয়সী ছেলে-মেয়েদের আসতে দেখিনি।’

তবে বইমেলায় তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতি বেশি হলেও বই কেনার আগ্রহ কম বলে জানিয়েছেন কয়েজন বিক্রেতা।

আসাদুল নামে এক বই বিক্রেতা বলেন, ‘বেশির ভাগ অল্প বয়সী ছেলে-মেয়েরা এসে বই ঘোটাঘুটি করে। ছবি তোলে, ভিডিও বানায়। তবে তারা বই কম কেনে।’

তিনিও আরও বলেন, ‘আমি ৭ বছর ধরে মেলায় বই বিক্রি করছি। তবে এইবারই প্রথম তরুণ-তরুণীর উপস্থিতি বেশি দেখছি।’

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল থেকে খুলনা মহানগরীর বয়রাস্থ বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে ২১ দিনব্যাপী একুশে বইমেলার পর্দা ওঠে।

ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এবং সরকারি ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য বইমেলা উন্মুক্ত থাকছে।

এবারের মেলায় প্রকাশনা সংস্থা, বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও লাইব্রেরির ৯৫টি স্টল রয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে প্রতিদিন সন্ধ্যায় নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের জন্য উপস্থিত বক্তৃতা, বিতর্ক, আবৃত্তি ও বইপাঠ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।

খুলনা বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের উপপরিচালক ড. আহছান উল্যাহ বলেন, ‘বইমেলায় মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসছে। এখানে বইয়ের পাশাপাশি খাবার ও কুটির শিল্পের স্টলও রয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় নানা রকমের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।’

বইমেলা পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ ও ২০০৪ সালে সাহিত্য সংসদ চত্বরে মেলার আয়োজন করা হয়। ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত স্থানীয় সাহিত্য সংসদ বয়রার উদ্যোগে বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে একুশে বইমেলা উদযাপন করে।

এর মধ্যে ২০০৯ সালে সাহিত্য সংসদ ও বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের যৌথ উদ্যোগে মেলার আয়োজন করা হয়। পরে ২০১০ সাল থেকে খুলনা জেলা প্রশাসন এ মেলার আয়োজন করে আসছে।

খুলনা একুশে বইমেলা স্টল বরাদ্দ ও অর্থ উপকমিটির সদস্য বদরুল আলম বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ বাড়ার কারণে বিধিনিষেধ থাকায় ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মেলা শুরু করা সম্ভব হয়নি। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একুশে বইমেলা-২০২২ উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভায় ২৫ ফেব্রুয়ারি বইমেলার উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায় বইয়ের স্টল বরাদ্দের জন্য ৬ হাজার টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে প্রায় ৯৫টি স্টল বরাদ্দ হয়েছে। জেলা প্রশাসকের আন্তরিকতায় এবারের বইমেলা করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান বদরুল আলম।

এ বিভাগের আরো খবর