বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নামের মিলে জেল খাটলেন জাহাঙ্গীর

  •    
  • ২ মার্চ, ২০২২ ২২:৫৭

অবশেষে ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফাতেমা ফেরদৌস বুধবার জাহাঙ্গীর আলমকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

আসল আসামির নাম জাহাঙ্গীর মিয়া, কিন্তু পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে জাহাঙ্গীর আলমকে। নামের একটা অংশে মিল থাকার কারণে ঘটেছে এই ঘটনা।

অবশেষে ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফাতেমা ফেরদৌস বুধবার জাহাঙ্গীর আলমকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার বাসিন্দা ৫৫ বছর বছর বয়সী জাহাঙ্গীর আলম একজন কৃষক। আর প্রকৃত আসামি একজন পেশাদার ছিনতাইকারী ।

জাহাঙ্গীর আলমকে ২০২১ সালের নভেম্বরে ঢাকার একটি ছিনতাই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। নিরপরাধ জাহাঙ্গীরকে এক মাস কারাগারে থাকতে হয়েছে।

এ বিষয়ে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. শাহ জালাল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকার বংশাল থানায় করা ছিনতাই মামলার প্রকৃত আসামির নাম জাহাঙ্গীর মিয়া। কিন্তু, নামে মিল থাকায় পুলিশ ভুল করে গ্রেপ্তার করেছিল ময়মনসিংহের জাহাঙ্গীর আলমকে।’

তিনি জানান, ছিনতাইয়ের মামলায় জাহাঙ্গীর মিয়া পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। সেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া থানায় গেলে পুলিশ কোন যাচাই বাছাই না করেই জাহাঙ্গীর মিয়ার পরিবর্তে জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করেছিল।

এই আইনজীবী আরও জানান, বিচারক বুধবারে এজলাসে উপস্থিত মামলার তদন্ত কমকর্তা বংশাল থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক রাশেদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন- ‘দোষটি আমাদের নয়। ভুল করে ভুল আসামি গ্রেপ্তার করে ধোবাউড়া থানার পুলিশ। কারণ আসল আসামিকে আমরা চিনতাম না। তাই ভুল করেছি।’

বিচারক দুই জাহাঙ্গীরকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে ও পরিচয়পত্র নম্বর উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলমকে অব্যাহতির আদেশ দেন।

এর আগে বিষয়টি আসামির আইনজীবী আদালতের নজরে আনার পরে বিচারক বুধবার তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেন। সে ব্যাখ্যার পরে বিচারক নিরপরাধ জাহাঙ্গীর আলমকে অব্যাহতির আদেশ দেন।

জাহাঙ্গীর আলম আদালতপাড়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশ সঠিক আসামি যাচাই-বাছাই না করেই আমাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে এসেছে। আমি বার বার অনুনয় করে পুলিশকে বলেছিলাম যে, আমি একজন সাধারণ কৃষক। আমার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে কি করে মামলা আসবে? কিন্তু পুলিশ আমার কথ শোনেনি।

‘পরে আমার আইনজীবী আদালতে বললে বিচারক আমার ভোটার আইডি যাচাই-বাছাই করে জামিন দেন। বুধবার আদালতে হাজিরা দিতে এলে আদালত আমাকে অব্যাহতি দেন। পুলিশের ভুলের কারণে আমি এক মাস কারাগারে ছিলাম। আমি সামাজিক ও পারিবারিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। জীবনে কোনো অপরাধ না করেও জেলের মুখ দেখতে হলো।’

জাহাঙ্গীর আলমের আইনজীবী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘আদালত মামলা থেকে আমার আসামিকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তিনি কোনো অপরাধ করেননি। এ ছাড়া কোনো দিন আমার আসামি কারাগারেও যাননি। পুলিশের ভুলের কারণে নিরপরাধ ব্যক্তি এক মাস জেল খাটলেন। তিনি আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হলেন।’

তিনি বলেন, ‘আদালতে শুনানিতে বলেছি, জাহাঙ্গীর আলম যেন এ মামলায় আর কোনো হয়রানির শিকার না হন, তাই প্রকৃত আসামির পাশে ভোটার আইডি নাম্বার দিয়ে রাখতে আদালতে সুপারিশ করেছি। তাহলে ভবিষ্যতে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে গেলে নিশ্চিত হবে, আসল আসামি কে।’

এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে যদি এ মামলায় প্রকৃত আসামি জাহাঙ্গীর মিয়ার কারাদণ্ড হয়, তখন আমার আসামি আবার হয়রানির শিকার হতে পারেন। তাই আদালতকে বলেছি, প্রকৃত আসামির ভোটার আইডিসহ যেন ভবিষ্যতে ওয়ারেন্ট পাঠানো হয়।’

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মো. এনায়েত উল্লাহ নামের এক ব্যক্তি ২০২০ সালের ১৭ আগস্ট চার লাখ টাকা সঙ্গে নিয়ে গুলিস্তানের উদ্দেশে রওনা হলে ছিনতাইয়ের শিকার হন। পরে এ ঘটনায় মামাল করেন তিনি।

মামলাটি ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। এই মামলায় জাহাঙ্গীর মিয়া আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর