শরীরে রাশিয়ান সেনাদের পোশাক, মুখটা বিমর্ষ। চোখ দিয়ে ঝরছে পানি। কাঁদছেন আর কথা বলছেন এক যুবক। তিনি যা বলছেন, তার অর্থ হলো রাশিয়া তাদের ‘কামানের গোলা’ হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা ইউক্রেনের নিরীহ মানুষের ওপর হামলা করছেন।
বুধবার ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীর ফেসবুক পেজে এই ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল।
পার্শ্ববর্তী দেশ ইউক্রেনে হামলা চালাতে গিয়ে আটক হওয়া ওই রাশিয়ান সেনাকে ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, তাদের যে ইউক্রেনে হামলার জন্য নিয়ে আসা হচ্ছে, তা তাদের ধারণাই ছিল না। যুদ্ধের ময়দানে গোলার মতো ফেলে দেয়া হয়েছে তাদের।
চোখ মুছতে মুছতে ওই সেনা বলছিলেন, ‘এটা আমাদের যুদ্ধ না। মা ও স্ত্রীরা আপনারা আপনাদের স্বামীকে নিয়ে যান। এখানে থাকার কোনো দরকার নেই।’
ইউক্রেনের পতাকার পাশে বসে থাকা অবস্থায় এ কথা বলছিলেন এই রাশিয়ান সেনা।
আরেকটি ভিডিওতে হাতকড়া পরা এক রাশিয়ান সেনাকে দেখা যায়। তিনি কাঁদছিলেন আর বলছিলেন, ‘এমনকি তারা সেনাদের একটা মরদেহ পর্যন্ত তুলে নেয় না। শেষকৃত্য তো হয়ই না। ’
টেলিগ্রামের পোস্ট করা একটি ভিডিওতে রাশিয়ার আরেক সেনাকে বলতে শোনা যায়, যখন তারা বুঝতে পারলেন ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য তাদের পাঠানো হয়েছে, তখন তারা হতাশ হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বলা হয়েছিল যেহেতু এটা যুদ্ধের সময়, আমরা প্রত্যাখ্যান করলে আমাদের গুলিও করা হতে পারে। আমরা রাষ্ট্রের শত্রু হব।’
ইউক্রেন সীমান্তে কয়েক দিন ধরেই সেনা মেতায়েন করে রেখেছিল রাশিয়া। অবশেষে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে হামলা চালায় তারা। প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ইউক্রেনও।
যুদ্ধে একের পর ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা। ধ্বংস হচ্ছে আবাসিক ঘরবাড়ি, স্থাপনাসহ নানা জায়গা। ইউক্রেনের সেনা ও বেসামরিক মানুষ যেমন নিহত হচ্ছে, তেমনি প্রাণ যাচ্ছে রাশিয়ার সেনাদেরও।
এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ৫ হাজার ৮৪০ রাশিয়ান সেনা নিহতের তথ্য দিয়েছে ইউক্রেন। আর সেনাসহ পাঁচ শতাধিক ইউক্রেনের নাগরিকের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে তারা।সব মিলিয়ে আট লাখের বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে সীমান্তবর্তী দেশগুলোয় আশ্রয় নিয়েছে।
হামলা শুরুর পর পশ্চিমাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া। তবে যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কার্যত কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি তারা। যুদ্ধ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে এরই মধ্যে একটি বৈঠক করেছে রাশিয়া আর ইউক্রেন। তবে সেখানেও কোনো ঘোষণা আসেনি।