গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ২১ বছর ধরে পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আজিজুল হক রানা ওরফে শাহনেওয়াজ ওরফে রুমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চার দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মামুনুর উর রশিদ বুধবার দুপুরে আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন।
শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. রশিদুল আলম চার দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়াননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ এসব বিষয় নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
ঢাকার খিলক্ষেত এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে রুমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কোটালীপাড়ায় বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে হত্যাচেষ্টা মামলায় ফায়ারিং স্কোয়াডের সদস্য ছিলেন রুমান।
মামলার এজাহারে বলা হয়, পয়লা মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গােপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ বা হুজিবির কিছু সদস্য সরকার ও রাষ্ট্রবিরােধী ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালাতে জোহর নামাজের পর জড়ো হবেন। তারা খিলক্ষেত থানাধীন আমতলার হাজিবাড়ি রােডের বায়তুস সালাম জামে মসজিদে (হাজীবাড়ি মসজিদ অস্থায়ী) গােপন বৈঠকে বসবেন বলে পুলিশের কাছে খবর আসে।
পরে ওই এলাকায় অবস্থান নিয়ে গোপনে ঘটনার বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করেন পুলিশ সদস্যরা। পুলিশকে দেখে দৌড়ে পালানাের চেষ্টাকালে আসামিকে আটক করা হয়, কিন্তু বাকিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, আসামি রুমান নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হুজিবির সক্রিয় সদস্য ও সমর্থক।
কোটালীপাড়ায় হত্যাচেষ্টা মামলার সারসংক্ষেপ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ কলেজের মাঠে ২০০০ সালের ২১ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশ থেকে ৭৬ কেজি ওজনের একটি বোমা উদ্ধার করা হয়। ওই মাঠেই পরদিন শেখ হাসিনার সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল।
এ ঘটনায় কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক নূর হোসেন মামলা করেন।
এ ঘটনায় করা হত্যাচেষ্টা মামলায় ২০১৭ সালে ঢাকার দ্রুত বিচার আদালত-২-এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টও আসামিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে।
প্রায় ২১ বছর পর ২০২১ সালের ২৩ মার্চ এ মামলার রায় ঘোষণা হয় বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, রাষ্ট্রদ্রোহ ও হত্যা ষড়যন্ত্র মামলায়। এ মামলায় ১৪ আসামির সবার প্রাণদণ্ডের আদেশ দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান।
আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা প্রকাশ্যে ফায়ারিং স্কোয়াডে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা জানান বিচারক।