কয়েক বছর ধরে ভোটারদের তাদের ইচ্ছামতো ভোট দিতে বাধাদানের একের পর এক অভিযোগের মধ্যে নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ভোটাররা যদি বাধাবিপত্তির মুখোমুখি হন, তাহলে কমিশন তার পাশে দাঁড়াবে।
সিইসি বলেন, ‘ভোটাধিকার রক্ষা করার বিষয়টি কোনো বুলি নয়, কমিশন এটা অঙ্গীকার করে ফেলেছে।’
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবন মিলনায়তনে ভোটার দিবসের আলোচনায় এই মন্তব্য করেন সিইসি।
মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, রক্ষা করব ভোটাধিকার’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে চতুর্থবারের মতো দিবসটি পালন করছে নির্বাচন কমিশন। আউয়াল কমিশনের জন্য এই দিবস এবারই প্রথম।
কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন এই দিবসটি পালন করতে শুরু করে। তবে এই কমিশনের আমলে বহু নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতা, ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা, জাল ভোট, এমনকি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত হতে আঙুলের ছাপ দেয়ার পর বাটন চেপে অন্যের ভোট দিয়ে দেয়ার অভিযোগ ছিল।
নানা অভিযোগ নিয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি হুদা কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেয়, পরদিন তারা দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
নতুন কমিশন এখনও কোনো ভোটের আয়োজন করেনি। তবে দায়িত্ব গ্রহণ করেই তারা জানিয়েছেন, ভোট নিয়ে জনগণের মধ্যে আস্থা ফেরানোই তাদের প্রধান লক্ষ্য।
ভোটাধিকার রক্ষার অঙ্গীকার অন্তরে ধারণ করতে হবে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘এটা না হলে কিন্তু মিথ্যাচার হয়ে যাবে। অন্তত চেষ্টা করতে হবে। ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে গেলে বাধাবিপত্তির মুখে পড়তেও পারে, নাও হতে পারে। যদি বাধাবিপত্তির মুখোমুখি হয়, তাহলে কমিশনের পক্ষ থেকে এই প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে যে আমরা তাদের পাশে দাঁড়াব। যাতে করে তারা মুক্তভাবে, স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।’
নির্বাচনি কর্মকর্তাদের দায়িত্বের প্রতি আরও সচেতন হওয়ার আহ্বানও জানান সিইসি। বলেন, ‘দেখাতে হবে যে আমরা আমাদের দায়িত্ব সম্পর্কে অন্তত চেষ্টা করেছি। আমরা যদি কোনো অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাই, তাহলে প্রচণ্ড রকম দুর্নীতি হবে, যেটা হবে ক্ষমার অযোগ্য।’
নির্বাচন কমিশনের কেউ প্রলুব্ধ হয়ে বা প্রভাবিত হয়ে কেউ কোনো কাজ করবে না বলে বিশ্বাস করেন সিইসি। নির্বাচনি কর্মকর্তাদেরও প্রভাবমুক্ত ও প্রলোভনমুক্ত থেকে দায়িত্ব পালনের প্রতি গুরুতারোপ করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশন সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মোহাম্মদ আলমগীর ও আনিছুর রহমান।