বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অ্যাপ খুলে প্রতারণা: গ্রাহকের ১৫ কোটি টাকা ‘উধাও’

  •    
  • ২ মার্চ, ২০২২ ১৬:৩৩

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন দাস বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের থানাতেও মামলা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এসব চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে অনলাইনে প্রতারণার মাধ্যমে একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বছরখানেক আগে উপজেলার হায়দরগঞ্জ বাজারে একটি ভবনের নিচতলা ভাড়া নিয়ে সাত যুবক ওই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সম্প্রতি তারা পালিয়ে গেলে প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসে।

স্থানীয়রা জানান, গুগল প্লে স্টোরের মাধ্যমে ড্রিম শপ লিমিটেড নামের একটি অনলাইন অ্যাপ খুলে ব্যবসা শুরু করেন প্রতারকরা। প্রতি গ্রাহকের কাছ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা করে নিয়ে অ্যাপটিতে তাদের হিসাব খোলা হতো।

ওই অ্যাপের মাধ্যমে নতুন হিসাবে প্রতিদিন দুটি করে ভিডিও বিজ্ঞাপন আসত। ভিডিওগুলো দেখলে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ২০ টাকা করে আয় যোগ হতো। এভাবে প্রতি মাসে একটি হিসাবে যোগ হতো ৬০০ টাকা করে।

প্রতারণার শিকার কয়েকজন জানান, চক্রটির দেয়া এই প্রলোভনে গ্রাহকরা এলাকা থেকে ১০০ থেকে ২০০ জন গ্রাহক সংগ্রহ করতেন। এর মাধ্যমে ১ লাখ থেকে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রতারণা করে আদায় করত চক্রটি।

প্রথম দিকে কিছু গ্রাহককে লোভ দেখাতে টাকা তুলতে দিলেও তিন মাস পর টাকা তোলার সুযোগটি বন্ধ করে দেয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে কয়েক দিন আগে গোপনে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে পালিয়ে যান প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। এভাবে প্রায় দু-তিন হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।

গ্রাহকের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া ওই প্রতিষ্ঠানের অভিযুক্ত সাতজন হলেন ইমরান হোসেন ফারাবি, ইকরামুল কবির, আমিন আহমেদ জুয়েল, উজ্জ্বল, মহসিন কবির, আনাছ ও নোমান। তাদের সবার বাড়ি উপজেলার হায়দরগঞ্জ এলাকায়।

এমন পরিস্থিতিতে কয়েক দিন ধরে প্রতিদিন টাকার জন্য অফিস ও ওই সব প্রতারক চক্রের বাসায় ভিড় জমাচ্ছেন গ্রাহকরা।

হায়দরগঞ্জের বাসিন্দা ভুক্তভোগী সৌরভ হোসেন ও আমির হোসেন জানান, অধিক লাভের আশায় তারা দুজন আলাদাভাবে নিজেদের শেষ সঞ্চয় ৮ লাখ টাকা এখানে জমা রাখেন। কর্মকর্তারা টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় এখন আর অ্যাপটিতে ঢোকা যাচ্ছে না।

তারা বলেন, ‘এখন কীভাবে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেব জানি না। যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি, তারা এখন টাকা চাচ্ছে। কিন্তু যাদের টাকা দিয়েছি তারা নিয়ে উধাও হয়েছে।’

প্রতারকদের বাড়িতে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের ভিড়। ছবি: নিউজবাংলা

ভুক্তভোগী মাইন উদ্দিন ও ফেরদৌসি বেগম জানান, চক্রটির প্রধান ইমরান হোসেন ফারাবীসহ অন্যরা ড্রিম শপ তৈরি করে অসংখ্য লোককে রাস্তায় বসিয়েছেন। যে ফারাবী ১০০ টাকা হাত খরচ করতে পারতেন না, হঠাৎ করে তিনি কোটি টাকা খরচ করে বিলাসবহুল ভবন নির্মাণ করেন। তার মতো অন্যরাও। তারা এলাকায় প্রচার করেন, কোম্পানি থেকে কোটি কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। তাদের এ পরিবর্তন দেখে লোকজন বেশি লাভের আশায় টাকা রাখত।

তারা আরও জানান, এসব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের কোনো অনুমোদন নেই। এরই মধ্যে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। এর পরও ধরাছোঁয়ার বাইরে চক্রটি। বরং উল্টো মামলা তুলে নিতে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে জানান তারা।

চক্রের সবাই শিবির ও ছাত্রদলের কর্মী বলে দাবি স্থানীয়দের। দ্রুত প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

তবে অভিযোগের বিষয়ে পলাতক ফারাবীর মা রহিমা আক্তার বলেন, ‘টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সঠিক নয়। সফটওয়্যার বন্ধ থাকায় লেনদেন বন্ধ রয়েছে।’

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, ‘প্রতারক চক্রকে ধরতে অভিযান চলছে। পাশাপাশি প্রতারণার দায়ে আদালতে মামলা হয়েছে বলে শুনেছি। এর পরও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।’

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন দাস বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের থানাতেও মামলা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এসব চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর