চটগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাধান হচ্ছে না শাটল ট্রেন সংকটের। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পরও চালু হয়নি সবগুলো ট্রেন। ট্রেনের বিকল্প হিসেবে যে সংখ্যক বাস চলার ঘোষণা দেয়া হয়েছে তাতে সংকটের কতটুকু মিটবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
মাইলেজ ইস্যুতে গত ২৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত জোড়া শাটলের মধ্যে তিন জোড়া বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ আছে দুই জোড়া ডেমু ট্রেনও।
গত রোববার শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সবগুলো শাটল চালু না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন ছয়টি বাস চলাচলের ঘোষণা দেয়া হয়।
রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শহীদুল ইসলাম জানান, বন্ধ তিন জোড়া শাটলের মধ্যে সোমবার থেকে এক জোড়া এবং মঙ্গলবার থেকে পূর্ণ শিডিউলে শাটল চলবে। ইঞ্জিন সংস্কারের কাজ শেষ হলে দ্রুত চালু হবে ডেমু ট্রেন।
ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার শহর থেকে ৩টা ৫০ মিনিটের এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাড়ে ৫টার ট্রেন চলতে শুরু করে। মঙ্গলবার শবে মেরাজের ছুটি উপলক্ষে ট্রেন চলে বন্ধের শিডিউলে।
তবে মঙ্গলবার রাতে আবার জানানো হয়, রেল ক্রসিং সংস্কারের কাজ চলায় এই চারটি ট্রেন চালু হতে আরও সময় লাগবে। ট্রেনের বিকল্প হিসেবে চলবে চারটি বাস। সকাল সাড়ে ৭টায় ট্রেনের বদলে শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে দুটি এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুপুর আড়াইটায় শহরের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে বাকি দুটি বাস।
আমাদের দাবি পুরোপুরি আদায় হয়নি। একটা শাটলে যতজন ছেলে-মেয়ে আসে সেটা কি এক বাসে হয়? আমরা এমন সিদ্ধান্তে কোনোভাবে সন্তুষ্ট না।
এই ঘোষণার পর ক্ষোভ জানান শিক্ষার্থীরা। তাদের প্রশ্ন, একটি ট্রেনের বিকল্প কীভাবে দুইটি বাস হতে পারে?
শাটল চালুর দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন রাহাত আল জুবায়ের।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল শাটল, আমরা শাটলই চেয়েছি। প্রক্টর স্যার আমাদের বলেছিলেন, শাটল চালু করতে কিছুদিন সময় লাগবে। এরপর আমরা দাবি জানাই, প্রতিটি শাটলের বিপরীতে ১০টি বাস দিতে হবে।
‘আমাদের দাবি পুরোপুরি আদায় হয়নি। একটা শাটলে যতজন ছেলে-মেয়ে আসে সেটা কি দুই বাসে হয়? আমরা এমন সিদ্ধান্তে কোনোভাবে সন্তুষ্ট না।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ২৭ হাজার। তাদের মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী শাটল ট্রেনে যাতায়াত করেন।
প্রতিটি শাটলে বগি থাকে ৮ থেকে ৯টি। প্রত্যেক বগিতে প্রায় ৩২ থেকে ৩৫টি সিট আছে যেগুলোতে তিনজন করে বসেন। সেই সঙ্গে এর প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক শিক্ষার্থীকে দাঁড়িয়ে যেতে হয়। সেই হিসাবে প্রতি বগিতে ২৫০ থেকে ৩০০ শিক্ষার্থী যাতায়াত করেন। অর্থাৎ একটি শাটলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ হাজারের বেশি।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে তাতে সিট সংখ্যা ৪৫ থেকে ৫০ জন। বসে ও দাঁড়িয়ে একটি বাসে ৭০ থেকে ৭৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী যাতায়াত করতে পারবেন না।
এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর শহীদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ট্রেনের সঙ্গে বাসের কম্পেয়ার করা যাবে না। আমাদের অ্যাভেইলেবল এত বাস নেই। শিক্ষকদের পরিবহনে যে বাসগুলো আছে সেগুলো থেকেই ম্যানেজ করে দিতে হচ্ছে। এ কারণে ইচ্ছা থাকলেও বেশি বাস দিতে পারছি না।’