বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মা-মেয়ে হত্যা: আটক যুবকই ‘ঘাতক’

  •    
  • ২ মার্চ, ২০২২ ০২:৩৮

পাশের ফ্ল্যাটের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ওই ভবনের নিচতলা থেকে ওপর তলা পর্যন্ত কয়েকটি ফ্ল্যাটের কলিং বেল চেপেছে জুবায়ের নামের ওই যুবক, কিন্তু কেউ দরজা খোলেনি। তাকে আগে কেউ দেখেনি।

নারায়ণগঞ্জে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় আটক যুবক জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। আটক আল জুবায়েরের সঙ্গে থাকা ব্যাগে চারটি ছুরি ও কয়েকটি হ্যান্ড গ্লাভস পাওয়া গেছে। সঙ্গে স্বর্ণের চেইনও উদ্ধার করা হয়েছে। জুবায়ের নগরীর পাইকপাড়ার আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে।

এর আগে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ফারজানা আক্তার শিলা নামের এক নারীকে আটক করেছিল পুলিশ। পরে জানা যায়, তিনি নিহত রুমা চক্রবর্তীর পুত্রবধূ।

পুলিশের ধারণা, স্বর্ণালংকার ও টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতে ওই যুবক রুমা চক্রবর্তী ও তার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা ঋতু চক্রবর্তীকে হত্যা করেছে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শাহ জামান জানান, এই জোড়া হত্যাকাণ্ডে আর কেউ জড়িত কি না তা জানতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।

রুমা চক্রবর্তীর স্বামী রাম প্রসাদ পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তিনি বাসায় ছিলেন না। বিকেল পৌনে ৩টার দিকে তিনি স্ত্রীকে তার মোবাইলে ফোন করলে আটক যুবক ফোন ধরে। এ সময় সে ঘরের কোথায় স্বর্ণালংকার ও টাকা-পয়সা আছে তা জানতে চায়। পরিচয় জানতে চাইলে সে ফোন কেটে দেয়।

পরে তিনি দ্রুত বাসায় গিয়ে দেখেন আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে আছে; মূল গেট বন্ধ। পুলিশ ভেতরে রয়েছে।

রাম প্রসাদ বলেন, ‘আমার মেয়ে ঋতু ৬ মাস ১৬ দিনের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। ওর স্বামীর বাড়ি চট্টগ্রামে। আমার স্ত্রী ও মেয়ের হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (তদন্ত) আমির খশরু বলেন, ‘আটক জুবায়েরকে নিহতদের পরিবারের কেউ চেনে না। ঘটনার পর জুবায়েরের ব্যাগ থেকে নিহত ঋতুর স্বর্ণের চেইন উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে চারটি ছুরি ও কয়েকটি হ্যান্ড গ্লাভস।’

প্রত্যক্ষদর্শী শংকর রায় বলেন, ‘হঠাৎ বাসার ওপর থেকে এক নারী দৌড়ে নিচে নেমে এসে চিৎকার করতে থাকে। এ সময় তার হাতে একটি বঁটি ছিল। এ কারণে লোকজন তাকে হত্যাকারী ভেবে বাইরে থেকে বাড়ির মূল গেট বন্ধ করে দিয়ে পুলিশে খবর দেয়।’

মা-মেয়েকে হত্যার অভিযোগে আটক মো. জুবায়ের। ছবি: নিউজবাংলা

সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ভবনের নিচে গিয়ে আমরা ফারজানা আক্তার শিলা নামের এক নারীকে পাই। পরে ৬ তলায় গিয়ে বাসার দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়। ধাক্কা দিলে ভেতর থেকে জুবায়েরের দরজা খুলে বাইরে আসে। তার হাতে ছুরি ছিল। পরে জিজ্ঞাসাবাদে সে মা-মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করে।’

শীলা পুলিশকে বলেন, ‘অনবরত কলিং বেল বাজছিল। তখন আমি আর ঋতু ভেতরের রুমে ছিলাম। বাইরের রুমে ছিলেন মা। তিনি দরজা খুলে দেন। এরপরই মার চিৎকার শুনতে পাই। প্রথমে ঋতু দৌড়ে যায়। তখন লোকটা মাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করছিল। ঋতু মাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে লোকটা তাকেও ছুরি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। এ সময় আমি হাতে বঁটি নিয়ে দরজা খুলে চিৎকার করতে করতে নিচে নেমে আসি।’

পুলিশ কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘নিহত রুমার শরীরের ৬ জায়গায় ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তার মেয়ে ঋতুর শরীরের সামনে ও পেছনে তিনটি ছুরি ঢুকানো ছিল। আরও ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সিআইডি ক্রাইম সিন ইউনিট আলামত সংগ্রহ করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

পাশের ফ্ল্যাটের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ওই ভবনের নিচতলা থেকে ওপর তলা পর্যন্ত কয়েকটি ফ্ল্যাটের কলিং বেল চেপেছে জুবায়ের নামের ওই যুবক, কিন্তু কেউ দরজা খোলেনি। ওই যুবককে তারা আগে দেখেননি।

আটক জুবায়েরের বাবা আলাউদ্দিন মিয়া জানান, তিনি শহরের টানবাজারের লবণ ব্যবসায়ী। তার ছেলে ২০১৩ সালে এইচএসসি পাস করে। এরপর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হয়। তবে আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় পড়ালেখা চালাতে পারেনি। এক-দেড় মাস ধরে তার ছেলে অস্বাভাবিক আচরণ করছিল।

এ বিভাগের আরো খবর