অর্থ আত্মসাৎ মামলায় টাকা দেয়ার শর্তে প্রিমিয়ার ব্যাংকের রাজশাহী শাখার ক্যাশ ইনচার্জ এফ এম শামসুল ইসলামকে জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট।
আত্মসাতের ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা জমা দিলে তবেই বিচারিক আদালত থেকে তিনি জামিন পাবেন বলে জামিন আদেশে বলা হয়েছে।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেয়।
রায়ে আদালত বলেছে, ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট শাখায় এ টাকা জমা দিলে তবেই তিনি জামিনে মুক্ত হতে পারবেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. অজি উল্লাহ। শুনানিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
রায়ের বিষয়ে আইনজীবী মো. অজি উল্লাহ বলেন, ‘এফ এম শামসুল ইসলামকে আদালত জামিন দিয়েছেন। কিন্তু শর্ত হচ্ছে আত্মসাতের ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা তাকে ওই ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দিতে হবে। দিতে পারলে তিনি জামিনে বের হতে পারবেন। আর বিচারিক আদালতের রায়ে নির্দোষ প্রমাণ হলে জমাকৃত টাকা তিনি ফেরত পাবেন।’
এফ এম শামসুল ইসলাম কৌশলে ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা সরিয়ে তা দিয়ে জুয়া খেলেছেন বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এ ঘটনায় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা করেন প্রিমিয়ার ব্যাংকের রাজশাহী শাখার ব্যবস্থাপক সেলিম রেজা খান।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, দিনের লেনদেন শেষে সন্ধ্যায় ক্যাশ মেলাতে গিয়ে তারা ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা হদিস পাননি। তখনই ক্যাশ ইনচার্জ শামসুল ইসলামকে তারা ধরে বসেন। পরে রাত ১২টার দিকে ওই কর্মকর্তাকে নিয়ে থানায় আসেন। থানায় টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে শামসুল ইসলাম তা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু টাকা ফেরত না দেয়ায় তাকে তিনদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ড শেষে আদালতে পাঠালে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পরে নিম্ন আদলতে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হয়ে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন শামসুল ইসলাম। প্রাথমিক শুনানির পর আদালত তার জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন। ওই চূড়ান্ত শুনানির পর সেই রুল যথাযথ ঘোষণা করে মঙ্গলবার রায় দেয় হাইকোর্ট।
মামলাটি এখনও তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।