২০ জিবি মোবাইল ডেটা কিনলে গ্রামীণফোন ভ্যাটসহ নিচ্ছে ৪০৯ টাকা। তবে এর মেয়াদ ৩০ দিন। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে অব্যবহৃত ডেটা শূন্য হয়ে যাবে।
তবে এই বিষয়টি আর দুই সপ্তাহ পর থাকছে না। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও অব্যবহৃত ডেটা আর হারিয়ে যাবে না। নতুন প্যাকেজের সঙ্গে তা যোগ হয়ে যাবে।
কেউ মোবাইল ডেটার পাশাপাশি কোনো প্যাকেজে যে টকটাইম নিয়ে থাকেন, সেটিও পরের প্যাকেজে যোগ হয়ে যাবে।
প্রাথমিকভাবে ১ মার্চ থেকেই এটি চালু হওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। তবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি তা ১৫ দিন পিছিয়ে দিয়েছে।
মোবাইল ফোনের প্রাথমিক যুগে টকটাইমের ক্ষেত্রেও এই মেয়াদের ব্যবস্থাটি ছিল। কেউ টকটাইম কিনে সেটি শেষ না করলে ২১ দিন পর তা হারিয়ে যেত। এখন কেবল নির্দিষ্ট মেয়াদি প্যাকেজ ছাড়া এই বিষয়টি আর নেই।
যদি টকটাইমের মেয়াদ না থাকে, তাহলে মোবাইল ডেটার ক্ষেত্রে কেন সময় বেঁধে দেয়া হবে- এমন প্রশ্নের মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার কয়েক মাস আগে অব্যবহৃত মোবাইল ডেটা হারিয়ে যাবে না বলে জানান।
এরপর বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করে বিটিআরসি। এর মধ্যে ১ মার্চ থেকে মোবাইল ডেটার অফুরন্ত মেয়াদের বিষয়টি সামনে আসার পর গ্রাহকদের মধ্যে স্বস্তি নেমে আসে।
তবে যেদিন থেকে এটি চালু হওয়ার কথা, তার আগের দিন বিটিআরসি থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পূর্বঘোষিত ১ মার্চ ২০২২ এর স্থলে আগামী ১৫ মার্চ রাত ১২ টা থেকে জারিকৃত নির্দেশিকার সকল নির্দেশনা অনুযায়ী ডেটা এবং ডাটা সংশ্লিষ্ট প্যাকেজসমূহ পরিচালনা করা হবে।’
বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় গ্রাহকদের অব্যবহৃত মোবাইল ডেটা ফেরত দেয়া নিয়ে বিটিআরসি কাজ করছে। আমরা অপারেটরদের কিছু নির্দেশনাও দিয়েছি ডেটা ফেরত দেয়ার জন্য। আমরা এ কাজ প্রায় শেষ করে নিয়ে এসেছি।’
গ্রাহকরা বলছেন, এখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। তাই সর্বক্ষণিক অনলাইনে থাকতে হয়। এজন্য অনেকের বাসায় ও অফিসে ব্রডব্যান্ডের সুবিধা রয়েছে। তাই যেটুকু সময় অফিস ও বাসার বাইরে থাকা হয় সেটুকুই মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হয়। অনেক সময়ই অনেক ডেটা মেয়াদ শেষেও থেকে যায়। তাই তারা মেয়াদহীন ইন্টারনেট প্যাকের পক্ষেই জোর দাবি করছেন।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অব্যবহৃত মোবাইল ডেটা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এ নিয়ে বিটিআরসিকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলেন তিনি।
ডেটা ফেরতের বিষয়টি গত বছরের ২২ আগস্ট বিটিআরসির ভার্চুয়াল গণশুনানিতেও উত্থাপন হয়। সেদিন বিটিআরসি থেকে বলা হয়, ডাটা ফেরতের বিষয়ে কথা হচ্ছে; কমিটি গঠন করা হয়েছে। সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তবে মোবাইল ফোন অপারেটররা বলছে, বিটিআরসির বর্তমান নির্দেশনা মেনে এখন কিছু ডেটা ফেরত দেয়া হয়। তাতে দুইটি শর্ত মানতে হবে। এর একটি হলো যে প্যাকেজের ডেটা অব্যবহৃত রয়ে গেছে, সেই একই প্যাকেজ আবার কিনতে হবে। আর দ্বিতীয়টি হলো বিদ্যমান প্যাকেজ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগেই প্যাকেজটি আবার কিনতে হবে।
তবে ভিন্ন প্যাকেজ কিনলে ডেটা ফেরত পাওয়া যায় না।
ডেটার মারপ্যাঁচ থেকে গ্রাহকদের রেহাই দিতে অপারেটর ও বিটিআরসির প্রতি দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মোবাইল অপারেটররা ডেটা নিয়ে যা করছে, তা এক ধরনের প্রতারণা। তাদের কথামতো আমাদের ডেটা ব্যবহার করতে ক্যালেন্ডার বা ডায়েরি মেনটেইন করতে হবে। তাতে দাগ দিয়ে রাখতে হবে, আমি কোন প্যাকেজ কবে কিনলাম, কবে মেয়াদ শেষ হবে।’