ম্যানিলাভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশকে ১৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার ঋণ দিচ্ছে। বর্তমান বিনিময়হার (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা।
এই অর্থ দেশের বন্যাকবলিত এলাকার নদী ভাঙনের ঝুঁকি প্রশমিত করার পাশাপাশি নদী তীরের কাঠামোগত উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। যার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। যমুনা, পদ্মা এবং গঙ্গা নদীর তীর রক্ষার কাজে ব্যয় হবে এই অর্থ।
এছাড়া নেদারল্যান্ডস সরকার নদী ব্যবস্থাপনায় ১ কোটি ৭৯ ডলারের কারিগরি সহায়তা দেবে। অনুদান হিসেবে পাওয়া যাবে এই অর্থ। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ১৫৪ কোটি টাকা। এডিবির মাধ্যমে এই অনুদান দেবে নেদারল্যান্ডস সরকার।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ বিষয়ে একটি চুক্তি সই হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং এডিবির পক্ষে সংস্থাটির আবাসিক প্রতিনিধি এডিমন গিনটিং চুক্তিতে সই করেন।
এডিবি ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বন্যা ও নদী তীরের ভাঙনের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিনিয়োগ কর্মসূচি (এফইআরএমআইপি) ২০১৪ সালে অনুমোদিত একটি প্রকল্প। এই প্রকল্পের দ্বিতীয় অংশের জন্য ঋণ দিচ্ছে এডিবি। নেদারল্যান্ডসও এই প্রকল্পের আওতায় অনুদান দিচ্ছে।
এডিবির আবাসিক প্রতিনিধি এডিমন গিন্টিং বলেন, ‘এই প্রকল্পটি দারিদ্র্য হ্রাস, জীবনযাত্রার উন্নয়ন এবং বন্যা-জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবিলার সাথে সাথে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা সমাধান ও সবুজায়নে সহায়ক হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রকল্পটি বাংলাদেশে নদী ব্যবস্থার দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য সরকারের রোড ম্যাপকে সমর্থন করে। নদী ভাঙনের ফলে সৃষ্ট ভূমি ক্ষয় হ্রাস, বন্যার ঝুঁকি হ্রাস, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং পুনরুদ্ধারকৃত চরের জমির উন্নয়নের মাধ্যমে এটি সরাসরি জীবন ও জীবিকাকে উপকৃত করবে।’
প্রকল্পটির প্রশংসা করে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন বলেন, ‘ব-দ্বীপের কার্যকর ডিজাইন এবং নদী ব্যবস্থায় স্থায়িত্ব বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসসহ আন্তর্জাতিক নদী বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতবিনিময় গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে যারা নদীর ওপর নির্ভরশীল তাদের সহযোগিতায় ‘এফআরইআরএমআইপি ট্রেস-১’ এর অধীনে একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই প্রকল্পের লক্ষ্ হলো ১৫ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিকে বন্যা-প্লাবন থেকে রক্ষা করা এবং ৫০ লাখ জনসাধারণকে এর ক্ষতি থেকে সহায়তা করা। সেই সঙ্গে অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে ৮ হাজার হেক্টর জমি নদী থেকে পুনরুদ্ধার করা হবে।