বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জমি দখল: এমপি বললেন কাগজ দেখাক ছেড়ে দেব

  •    
  • ১ মার্চ, ২০২২ ১৯:১৬

জমি দখলের অভিযোগ বিষয়ে সংসদ সদস্য রিমন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যে জমিতে কাজ করছেন, ওই জমি তিনি কিনেছেন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘৩১৭০ নম্বর দাগে ১৩ শতক জমির মধ্যে ৭ শতাংশ ওয়ারিশদের কাছ থেকে কিনেছি। একই দাগে বেলায়েত হোসেনের দাবীকৃত জমি সাড়ে ৩ শতাংশ। আমি তাকে (বেলায়েত হোসেনকে) বলেছি কাগজপত্র নিয়ে আসেন। কিন্তু তিনি আসেননি। এখানে যদি বেলায়েতের জমি থাকে, তবে আমি তাকে বুঝিয়ে দেব।’

বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে জমি দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।

সংসদ সদস্য দাবি করেছেন, তিনি ৭ শতাংশ জমি কিনেছেন। সেখানে বেলায়েত হোসেন নামে সেই ব্যক্তির জমি পড়ে থাকলে কাগজপত্র নিয়ে গেলে তিনি ছেড়ে দেবেন।

তবে ভুক্তভোগী বলছেন, জমিতে স্থগিতাদেশ আছে। এর মধ্যেই ভবন নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাওয়ার পর বাধা দেয়ার পর তাকে হুমকি দেয়া হয়েছে। এখন এমপিকে তিনি ফোন করতে পারছেন না। কারণ তার নম্বর ব্ল্যাক লিস্টে ফেলে রাখা হয়েছে।

যে জমিতে ভবন নির্মাণ হচ্ছে, সেটি ১৩ শতাংশের। ভুক্তভোগীর জমি সাড়ে ৩ শতাংশ। সব মিলিয়ে মালিক ১০ জন। এর মধ্যে ২ শতাংশেরও কম বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এমপি দাবি করছেন, বেশির ভাগই কিনেছেন।

ভুক্তভোগী বেলায়েত হোসেন বিষয়টি নিয়ে রোববার দুপুরে পাথরঘাটা থানায় অভিযোগ করেছেন।

তার অভিযোগ, কাকচিড়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়িসংলগ্ম এলাকায় তাদের পৈতৃক জমি দখল করে ভবন নির্মাণ করছেন এমপি রিমন। কাকচিড়া খাদ্যগুদামের চলাচলের পথ বন্ধ করে সেটিও দখলে নিয়ে ভবন নির্মাণের কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন খাদ্য বিভাগের জমিদাতারা।

বেলায়েতের বাড়ি পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের পূর্ব লেমুয়া গ্রামে। এমপি রিমনের বাড়িও একই ইউনিয়নে।

বেলায়েত বলেন, ‘১৪ বছর ধরে বণ্টন মামলা চালাইয়া মুই নিঃস্ব হয়ে গেছি মামলায়। মোর হেই জমি এখন এমপিসাব দখল কইরা বিল্ডিং গাঁততেছে। তিন দিন ধইরা তারে (এমপিরে) ফোন দিতেছি, ফোন না ধইরা ব্ল্যাক লিস্ট কইরা রাকছে। লাগলে মুই অই জমিতেই মইরা যামু, তোমো (তবুও) মোর জাগা ছাড়মু না।’

পাথরঘাটা থানায় করা লিখিত অভিযোগে বেলায়েত উল্লেখ করেন, লেমুয়া মৌজার জেএল নং-০৪, এসএ খতিয়ান নং-৫৪০/১১৬১ দাগ নং-৩১৭০-এর সাড়ে ৩ শতাংশ জমি নিয়ে আদালতে বণ্টন মামলা বিচারাধীন। সেই জমিতে স্থিতাবস্থার আদেশ আছে। কিন্তু আদালতের আদেশ অমান্য করে গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রিমন ও তার অনুসারী কাকচিড়ার বাসিন্দা মাহবুব দালাল সেই জমি দখলে নিয়ে মাটি কাটার কাজ শুরু করেন। তিনি বাধা দেয়ার পর বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার কথা হয়।

কিন্তু ২৭ ফেব্রুয়ারি বেলা ১টার দিকে তিনি তার জমিতে গিয়ে দেখতে পান, এমপি রিমন ও মাহবুব দালালের লোকজন ভবন নির্মাণের কাজ করছে। তিনি কাজ করতে নিষেধ করলে মাহবুব দালাল তাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে ওই স্থান ত্যাগ করতে বলেন।বেলায়েত জানান, ওই মৌজার এসএ ৫৪০ খতিয়ানের ৩১৭০ দাগে মোট ১৩ শতাংশ জমির এসএ রেকর্ডীয় মালিক মোট ১০ জন। এর মধ্যে চারজনের সাড়ে ৩ শতাংশ জমি আনোয়ার গংদের কেনা। বাকি জমির মধ্যে জালাল আহমেদ শিকদার ও আবু জাফর সোয়া ৭ শতাংশের মালিক। তারা জমি বিক্রি করেননি।

এমপি রিমন কেতাব আলী গংদের ০.৭৫ শতাংশ ও ইসমাইল গংয়ের ওয়ারিশদের ০.৬৫ জমির কিনেছেন। অথচ তিনি দাগের ৭ শতাংশ জমি দখল করে নিয়েছেন।সোমবার দুপুরে বেলায়েত হোসেন জানান, তিনি পাথরঘাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ পাঠিয়ে ওই কাজ বন্ধ করার অনুরোধ করেছেন। তবে মাহবুব দালাল ফোন করে তাকে বলেছেন, ‘এমপি সঙ্গে টক্কর দিয়ে জমি খাবা, দেকপা আনে তোমারে জমি কেডা খাওয়ায়। তোমার কাগজপত্র থাকলে ঢাকায় গিয়া এমপির লগে কতা কও মিয়া।’

বেলায়েত নিউজবাংলাকে বলেন, ২০০২ সালে জমির শরিকদের মধ্যে বণ্টন নিয়ে মামলা চালু হয়। আইনজীবীর বাবা মারা যাওয়ায় মামলাটির পরিচালনা ব্যাঘাত ঘটে। ২০০৮ সালে পুনরায় মামলা চালু করলে ২০২১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালত জমিতে স্থিতাবস্থা জারি করে আদেশ দেয়।বেলায়েত বলেন, ‘১৪ বছর ধরে বণ্টন মামলা চালাইয়া মুই নিঃস্ব হয়ে গেছি মামলায়। মোর হেই জমি এখন এমপিসাব দখল কইরা বিল্ডিং গাঁততেছে। তিন দিন ধইরা তারে (এমপিরে) ফোন দিতেছি, ফোন না ধইরা ব্ল্যাক লিস্ট কইরা রাকছে। লাগলে মুই অই জমিতেই মইরা যামু, তোমো (তবুও) মোর জাগা ছাড়মু না।’জমি দখল ও হুমকি দেয়ার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মাহবুব দালাল বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি ওই দাগ থেকে এমপি মহোদয় ৭ শতাংশ জমি কিনেছেন। সেখান থেকে তার ৫ শতাংশ জমি দখলে আছে। দখলীয় জমিতেই তিনি কাজ করছেন। ওনাকে হুমকি দেয়ার প্রশ্ন আসে না। তিনি যদি কাগজপত্রে জমি পান, তবে সেটা অন্য কেউ নিতে পারবে না।’সংসদ সদস্য রিমন বলেন, যে জমিতে কাজ করছেন, ওই জমি তিনি কিনেছেন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘৩১৭০ নম্বর দাগে ১৩ শতক জমির মধ্যে ৭ শতাংশ ওয়ারিশদের কাছ থেকে কিনেছি। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ওই জমি আমার দখলে। এখন সেই জমিতে আমি কাজ করছি।

‘একই দাগে বেলায়েত হোসেনের দাবীকৃত জমি সাড়ে ৩ শতাংশ। আমি তাকে (বেলায়েত হোসেন) বলেছি কাগজপত্র নিয়ে আসেন। কিন্তু তিনি আসেননি। এখানে যদি বেলায়েতের জামি থাকে, তবে আমি তাকে বুঝিয়ে দেব।’

এ বিভাগের আরো খবর