সঙ্গীর খোঁজে মেলা থেকে ছুটে গিয়ে এলাকাজুড়ে তাণ্ডব চালানো সার্কাসের হাতিটিকে অবশেষে বশে আনা গেছে।
২৬ ঘণ্টা পর হাতিটিকে চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের সাবেক উপপ্রধান বন সংরক্ষক তপন কুমার দে এবং তার দল।
এ সময় জেলা পুলিশসহ, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
লালমনিরহাটে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) আয়োজিত শিল্প মেলায় আনা সার্কাসের হাতিটি সোমবার বেলা ১১টার দিকে দড়ি ছিঁড়ে বেরিয়ে যায়। এরপর শুরু করে তাণ্ডব। এক এক করে দোকান ভাঙচুর, গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে ফেলে একপর্যায়ে পাশের সাহেবপাড়ার একটি বিলে নেমে যায় এটি। সেখানেও ফসলের ক্ষতি করে।
মাহুতসহ সার্কাস দলের সদস্যরা হাতিটিকে শান্ত করতে ব্যর্থ হয়ে ফোন দেন ফায়ার সার্ভিসে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও ভিড়তে পারেননি উত্তেজিত হাতিটির ধারেকাছে।
পরে ঢাকা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের সাবেক উপপ্রধান বন সংরক্ষক তপন কুমার বারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল মঙ্গলবার লালমনিরহাটে আসে।
জেলা শহরের সাহেবপাড়া ও বঙ্গবন্ধু কলোলিসংলগ্ন একটি বাঁশঝাড়ে থাকা হাতিটিকে বেলা ১১টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আনার প্রক্রিয়া শুরু করে দলটি। এরপর চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করার ১৫ মিনিটের মধ্যেই অচেতন হয়ে পড়ে। বেলা ১টার দিকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে বাঁশঝাড়েই এটিকে বেঁধে ফেলা হয়।
প্রধান মাহুত মজিবর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে আপাতত এখান থেকে তাকে সরানো যাবে না। এটিকে গাড়িতে করে অন্য জায়গায় নেয়া হলে আবারও উত্তেজিত হতে পারে। সে জন্য এখানে আরও বেশ কয়েক দিন রাখার পর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এলে আমরা ঢাকায় নিয়ে যাব।’
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘হাতিটি বর্তমানে মাহুতের নিয়ন্ত্রণে আছে। জ্ঞান ফেরার জন্য ইনজেকশনও দেয়া হয়েছে। বর্তমানে এটির যে উত্তেজিত অবস্থা, তা নিয়ন্ত্রণে আনতে এখানে আরও ১০ থেকে ১৫ দিন রাখতে হবে।’
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের সাবেক উপপ্রধান বন সংরক্ষক তপন কুমার দে বলেন, ‘হাতিটিকে আমরা জাইলোজিন ফোর এমএল ও ক্যাটামিন ফোর এমএল ইনজেকশন পুশ করেছি। এর কিছুক্ষণের মধ্যে এটি নিয়ন্ত্রণে আসে।
তিনি আরও বলেন, ‘আসলে হাতিটি মত্ত অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থা ১৬ সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। তাই এটিকে এখানে ১০-১৫ দিন রাখতে হবে। এর খাবার কমাতে হবে। এভাবে ধীরে ধীরে তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’
বাংলাদেশে এ ধরনের আরও ৮০ থেকে ৯০টি পুরুষ হাতি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাঝেমধ্যে এ ধরনের ঘটনা হয়। যদি ওই সময় সঙ্গী না থাকে তাহলে এ রকম আচরণ করে।’