মাদারীপুরের কালকিনিতে নিজ ঘর থেকে স্কুলছাত্র জহিরুল ইসলাম সরদারের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধারের এক সপ্তাহ পরও কোনো ক্লু পায়নি পুলিশ।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নের ১৫ বছরের জহিরুলকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরের দিন কালকিনি থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে হত্যা মামলা করেন নিহতের বড় ভাই শাহীন সরদার।
এদিকে ঘটনার সাত দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো আসামিকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে না পারায় সুষ্ঠু বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত নিহতের পরিবার।
মামলার বাদী শাহীন সরদার বলেন, ‘রাতে হত্যার ঘটনা ঘটায় কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। তাই অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে মামলা দেয়া হয়েছে। তবে তথ্যপ্রযুক্তির যুগে এত দিনেও কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ; বরং থানায় তাগাদা দিলে তারা আমাদের চুপচাপ থাকার কথা বলেছেন।
‘এত বড় একটি হত্যার ঘটনা ঘটল, অথচ কোনো ক্লু-ই বের করতে পারল না পুলিশ। আগামী দিনে কেমন বিচার পাব, সেটি নিয়ে আমরা সন্দিহান। থানা থেকে বারবার বলে, কিছুদিন অপেক্ষা করতে। আর কত দিন অপেক্ষা করলে হত্যার আসল ঘটনা জানতে পারবে পুলিশ।’
এ ব্যাপারে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইশতিয়াক আসফাক রাসেল বলেন, ‘চাইলেই কাউকে গ্রেপ্তার করা যায় না। সন্দেহজনকভাবে কাউকে হয়রানি করাও ঠিক হবে না। তথ্যপ্রযুক্তি আর স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে সুনির্দিষ্টভাবে অপরাধীকে শনাক্ত করা হবে।
‘পুলিশের সর্বোচ্চ সোর্স ও চেষ্টা দিয়ে মামলাটি দেখা হচ্ছে। আশা করি, অল্প দিনেই অপরাধীকে শনাক্ত করা যাবে। এই হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত, তা নির্ণয় করে মূল ঘটনা উদঘাটন করা যাবে। এর বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই।’
ওসি ইশতিয়াক আসফাক স্থানীয়দের বরাতে জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে খাবার খেয়ে জহিরুল তার ঘরে ঘুমাতে যায়। এ সময় তার মা ও ছোট বোন পাশের একটি কক্ষে ঘুমাতে যান। সকালে ঘুম থেকে না উঠলে জহিরুলের মা ঘরে গিয়ে ছেলের গলা কাটা মরদেহ দেখে চিৎকার করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়।
ওসি আরও জানান, জহিরুলের গলায় গভীর ক্ষত আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
নিহত জহিরুল মহরদ্দিরচর গ্রামে বারেক সরদারের ছেলে। সে সমিতির হাট মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ত। জহিরুলের পরিবারের অভিযোগ পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নিহতের মা কহিনুর বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার স্বামী কাতারপ্রবাসী। আমাদের তেমন কোনো শত্রু নেই। ঘরের তিন রুমের মধ্যে উত্তর কোনার রুমে জহিরুল ঘুমাত।
‘আমরা কোনো সাড়া-শব্দ পাই নাই। কেন, কী কারণে, কে হত্যা করেছে, এখনো বুঝতে পারছি না। তবে যারাই হত্যা করুক, আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’