দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদিত চাল সংরক্ষণে বরিশালে নির্মিত হচ্ছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির খাদ্য সংরক্ষণাগার সাইলো। এতে একসঙ্গে প্রায় ৫ কোটি কেজি চাল মজুত করা সম্ভব বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
খাদ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ সাইলোতে চালের গুণগত মান অক্ষুন্ন থাকবে অন্তত তিন বছর। এতে খাদ্য সংকট মোকাবেলায় ভূমিকা রাখাসহ এ অঞ্চলে চাল কল শিল্প গড়ে ওঠার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
জানা গেছে, বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় খাদ্য গুদাম নগরীর ত্রিশ গোডাউন এলাকায়। বৃটিশ আমলে তৈরি এসব গুদাম এখন অনেকটাই জরাজীর্ণ। এ অবস্থায় উপকূলীয় মানুষের খাবার মানসম্মত রাখতে আধুনিক ও উন্নতমানের সংরক্ষণাগার নির্মাণ কাজ চলছে।
ত্রিশ গোডাউন এলাকাতেই ৫২০ শতক জমিতে ৩৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সাইলো’র কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালে। এতে ৪৮ হাজার টন বা ৫ কোটি কেজি চাল মজুত রাখা যাবে বলে জানিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর।
বরিশাল খাদ্য অধিদপ্তরের কারিগরি বিশেষজ্ঞ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘জেলার বাসিন্দাদের জন্য একসঙ্গে তিন বছরের খাদ্য মজুত করা যাবে এখানে। যে কোনো দুর্যোগে এখান থেকে মানুষের দোড়গোরায় পৌঁছে দেয়া যাবে সুষম খাদ্য।’
সাইলোটিতে নদী ও সড়কপথে আসা চাল জেটি থেকে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে অটোমেশনে সংরক্ষণাগারে মজুত হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল সাইলো প্রকল্পের প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান।
নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে বরিশাল সাইলোতে। ছবি: নিউজবাংলা
বরিশাল আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সাইলো নির্মিত হলে গুণগত খাদ্য সংরক্ষণসহ এ অঞ্চলে রাইস মিল শিল্পও গড়ে উঠবে, কারণ এ অঞ্চলে ধানের প্রচুর উৎপাদন হয়।’
মূলত, সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে যে চাল বা গম সরবরাহ করা হয় সেগুলো খাওয়ার উপযুক্ত নয়। আটাও ৪-৫ দিনের বেশি মজুত রাখলে তাতে পোকা ধরে যায়। এমন সব অভিযোগের প্রেক্ষিতেই গুদাম তৈরি ও সংস্কারের উদ্যোগ নেয় খাদ্য অধিদপ্তর।
অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ৮টি সাইলোর মধ্যে ২টিতে গম আর বাকি ৬টিতে চাল রাখা হবে।
জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১১ মার্চ প্রকল্পটি একনেকের সভায় অনুমোদন পায়। ওই বছরেই ৮ এপ্রিল পরিকল্পনা কমিশন ও ৫ মে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জিও (সরকারি আদেশ) পায়। ২০১৪ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটি আগামি বছর শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
দেশে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সাইলোগুলোর মধ্যে বরিশাল চতুর্থ।