বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ছাত্রলীগ না করায়’ শিক্ষার্থীকে মারধর তদন্তে কমিটি

  •    
  • ১ মার্চ, ২০২২ ১০:৪০

তদন্ত কমিটির প্রধান ও শেখ মুজিব হলের প্রভোস্ট মাসুম হাওলাদার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘটনা লজ্জাজনক। আমরা ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি।’

ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ও শেখ মুজিব হলের প্রভোস্ট মাসুম হাওলাদারকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ছাত্র উপদেষ্টা তপন কুমার সরকার ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান।

মঙ্গলবার সকালে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. সাইফুল কবির।

তিনি বলেন, ‘মারামারি নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে এসেছে। কোনো কারণেই একজন শিক্ষার্থীকে কেউ মারধর করতে পারে না। ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।

‘আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

শিক্ষার্থী নির্যাতনের বিচার চেয়ে গত সোমবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ছবি: নিউজবাংলা

তদন্ত কমিটির প্রধান ও শেখ মুজিব হলের প্রভোস্ট মাসুম হাওলাদার আজ সকালে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘটনা লজ্জাজনক। আমরা ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। অভিযোগে যাদের নাম এসেছে, ঘটনার সঙ্গে সত্যতা মিললে তাদের নাম উল্লেখ করে আমরাও প্রতিবেদন জমা দেব। এরপর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’

এ বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা তপন কুমার সরকার বলেন, ‘কেউ ছাড় পাবে না। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমেই অভিযুক্তদের মুখোশ উন্মোচিত হবে।’

এর আগে ছাত্রলীগ না করায় রোববার রাতে ওয়ালিদ নিহাদ নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগকর্মীদের বিরুদ্ধে। আহত ওয়ালিদ নিহাদকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

নিহাদের অভিযোগ, তার ওপর রোববার রাত দেড়টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী নির্যাতন চলে। বঙ্গবন্ধু হলের একাত্তর ব্লকে ডেকে নিয়ে তাকে যারা মারধর করেন তারা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। ছাত্রলীগ না করায় তাকে মারা হয় বলে দাবি নিহাদের।

শিক্ষার্থী নির্যাতনের এই ঘটনায় পরদিন দুপুর থেকেই উত্তেজনা চলে ক্যাম্পাসে। এ সময় প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তারা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেন।

শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে নির্যাতনের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বিকেলে অভিযোগটি হাতে পেয়েছি। আহত শিক্ষার্থী এখনও হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনাটির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

শিক্ষার্থী নির্যাতনের বিচার চেয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ছবি: নিউজবাংলা

রোববার রাতে মারধরে জখম হলে শিক্ষার্থী নিহাদকে ভর্তি করা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

আহত শিক্ষার্থী অভিযোগে জানান, রোববার রাত দেড়টার দিকে তাকে ডেকে নেয়া হয় বঙ্গবন্ধু হলের একাত্তর ব্লকের ৩২৪ নম্বর কক্ষে। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের পলাশ তাকে ডেকে নেন। রুমটিতে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে তাকে থাপ্পড় মারেন নাট্যকলা বিভাগের হিমেল। এরপর তুহিন, মুমিন, অ্যালেক্স সাব্বির, তানভীরসহ অন্তত ১০ জন তাকে লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন। বুকের ওপর দাঁড়িয়ে মেরেছেন ফোকলোর বিভাগের আবু নাঈম আব্দুল্লাহ। রাত আড়াইটার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

ওয়ালিদ নিহাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ না করার কারণে আমাকে ডাকা হয়। পারিবারিক সমস্যার কারণে আমার রাজনীতি করা সম্ভব নয়। আমি পড়াশোনা নিয়েই থাকতে চাই। কিন্তু আমাকে ক্যাম্পাসে থাকতে হলে ছাত্রলীগ করতে হবে বলে হুমকি দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো শিক্ষকের কাছে বিচার চাইতেও নিষেধ করা হয়।

‘বেশি কথা বললে ক্যাম্পাসে থাকতে পারব না, বুয়েটের আবরার ফাহাদের মতো মরতে হবে- এমন হুমকি দেয়া হয়েছে।’

নিহাদ দাবি করেন, নির্যাতনের একপর্যায়ে তার বুকে রামদা ধরা হয়। তাকে হুমকি দিয়ে ফেসবুকে খালেদা জিয়ার ছবি আপলোড করানো হয়। তখন একটি ভিডিও ধারণ করা হয়। একই সঙ্গে জোরপূর্বক তাকে দিয়ে বলানো হয়, ‘২০২৩ সালের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, তারেক জিয়া দেশে ফিরবে। তখন ক্যাম্পাসে কোনো ছাত্রলীগের কুত্তা থাকবে না।’

মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগকর্মী তুহিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ও আমার ডিপার্টমেন্টের জুনিয়র। ঘটনার সময় আমি সেখানে ছিলাম না, ঘুমিয়ে ছিলাম। সকালে শুনেছি এ ঘটনা। তাকে কে বা কারা নির্যাতন করছে আমি জানি না। তদন্ত করলে সব পরিষ্কার হবে।’

বিষয়টি জানতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিবের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। এসএমএস দিলেও জবাব দেননি।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘অভিযোগে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তারা ছাত্রলীগের কর্মী। আমাদের ইন্ধনে কেউ মারধর করেনি। ঘটনার দিন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলাম না। শুনেছি ব্যক্তিগত বিরোধে এ ঘটনা ঘটেছে।’

এ বিভাগের আরো খবর