বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘দরপতন গুজব ছড়িয়ে’, হোতাদের শাস্তির ঘোষণা বিএসইসির

  •    
  • ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২২:০৯

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ইস্যু করে একটি গোষ্ঠী বাজারে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এর মাধ্যমে বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু বর্তমান কমিশন তা কখনও হতে দেবে না। যারা-ই এর সঙ্গে জড়িত, তাদের সবাইকে খুঁজে শাস্তির আওতায় আনা হবে: বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।

নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পুঁজিবাজারে দরপতন করা হয়েছে বলে মনে করেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। বলেছেন, এর পেছনে যারা, তাদের শাস্তি দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

সোমবার রাজধানীর হোটেল পূর্বাণীতে পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) এবং বাংলাদেশ অ্যাকাডেমি ফর সিকিউরিটি মার্কেটের (বিএএসএম) যৌথ উদ্যোগে এক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

এই কর্মশালার আগের দুই দিন দেশের পুঁজিবাজারে বলতে গেলে ঝড় বয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার ১০৯ পয়েন্টের পর রোববার ১৬৩ পয়েন্ট পতনে ছড়ায় আতঙ্ক।

বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলার পর সারা দুনিয়াতেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। তবে পরদিনই বিশ্ব পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ায়। তবে বাংলাদেশে তা হয়নি।

এই দরপতন যুদ্ধের কারণে কি না, এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে বিএসইসি কমিশনার শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পুঁজিবাজারে গত দুই দিনে যে পতন হয়েছে, তা কেবল গুজবের কারণেই। গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ পতনকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার যুদ্ধের প্রভাবের কথা বলা হচ্ছে, তা ঠিক নয়।’

এই কর্মশালার আগের দুই দিন দেশের পুঁজিবাজারে বলতে গেলে ঝড় বয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার ১০৯ পয়েন্টের পর রোববার ১৬৩ পয়েন্ট পতনে ছড়ায় আতঙ্ক। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলার পর সারা দুনিয়াতেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। তবে পরদিনই বিশ্ব পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ায়। তবে বাংলাদেশে তা হয়নি।

তিনি বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ইস্যু করে একটি গোষ্ঠী বাজারে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এর মাধ্যমে বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বর্তমান কমিশন তা কখনও হতে দেবে না। যারা-ই এর সঙ্গে জড়িত, তাদের সবাইকে খুঁজে শাস্তির আওতায় আনা হবে।’

বিএএসএমের মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ, বিএসইসির সাবেক কমিশনার আরিফ খান, সিরডাপের গবেষণা পরিচালক হেলাল উদ্দিন, বিআইবিএমের অধ্যাপক শাহ মোহাম্মদ আহসান হাবীব এবং সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমান।

নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে ব্যাখ্যা

এই দরপতনের পেছনে ইউক্রেন যুদ্ধ ছাড়াও নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে একটি সংবাদও আগুনে ঘি ঢেলেছে বলে ধারণা করা হয়।

তবে বিএসইসি কমিশনার জানান, তাদের আদেশ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ ২০২০ সালে এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নেগেটিভ ইক্যুইটির বিপরীতে সঞ্চিতি না রাখলেও চলবে। এরপর আর কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি, নতুন কোনো সিদ্ধান্তও নেয়নি বিএসইসি। তাই পুরোনো এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ভীতি ছড়ানোর বিষয়টি মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের পুঁজিবাজারবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নেরও তাগিদ দেন শামসুদ্দিন আহমেদ।

বহুজাতিক বড় কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আনার তাগিদ

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, ‘ইউনিলিভার, মেটলাইফ, নেসলেসহ দেশি-বিদেশি শতাধিক বড় কোম্পানি এখনও পুঁজিবাজারের বাইরে। এসব কোম্পানিকে বাজারে আনার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।’

‘সর্বশেষ ২০২০ সালে এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নেগেটিভ ইক্যুইটির বিপরীতে সঞ্চিতি না রাখলেও চলবে। এরপর আর কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি, নতুন কোনো সিদ্ধান্তও নেয়নি বিএসইসি। তাই পুরোনো এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ভীতি ছড়ানোর বিষয়টি মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।’

তিনি বলেন, ‘ভালো কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনতে পর্যাপ্ত আর্থিক প্রণোদনা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে বড় বড় লাভজনক কোম্পানিকে বাজারে আনা গেলে পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়বে, বিনিয়োগকারীসহ স্টেকহোল্ডাররা লাভবান হবেন; অন্যদিকে সরকারেরও রাজস্ব আয় বাড়বে।’

‘বাংলাদেশ ব্যাংক অতিরক্ষণশীল’

হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশেই ভুল নীতির কারণে বুদ্বুদ তৈরি হয়। ২০১০ সালে বাংলাদেশেও বুদ্বুদ ও ধস তৈরি হয়েছিল ভুল পলিসির কারণে। সম্ভবত এসব কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিমালার ক্ষেত্রে অতিরক্ষণশীল অবস্থানে থাকে, পুঁজিবাজারে সূচক একটু বাড়লেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। বাস্তবে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো তেমন কিছু নেই।

‘বাজারে বেশির ভাগ শেয়ারের মূল্য এখনও যৌক্তিক পর্যায়ের নিচে। গত এক দশকের মূল্যস্ফীতিসহ অন্যান্য বিষয় সমন্বয় করা হলে সূচক এমনিতেই সাড়ে ৭ হাজার থাকার কথা, দৈনিক গড় লেনদেন হওয়ার কথা ৩ হাজার কোটি টাকার ওপরে।’

পুঁজিবাজার পরিস্থিতি নিয়ে কর্মশালায় বক্তারা

আরিফ খান বলেন, ‘পুঁজিবাজারসহ দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নীতিমালা এবং এসব নীতিমালা প্রণয়নে যুক্ত সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় জরুরি। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে, এসব সংস্থার অনেকেই এই সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব বুঝতে পারছেন না।’

তিনি বলেন, ‘গত ৩০ বছরে আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ৯৯ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী পুঁজিবাজারে এসে লোকসান দিয়েছেন। এর কারণ তাদের বড় অংশ পুঁজিবাজার সম্পর্কে না জেনে, না বুঝে বিনিয়োগ করেন। হুজুগে ও গুজবে বিশ্বাস করে শেয়ার কেনেন, কোম্পানির মৌলভিত্তি না দেখে আইটেম খোঁজেন।’

শাহ মোহাম্মদ আহসান হাবীব বলেন, ‘আমাদের দেশে একটা শক্তিশালী পুঁজিবাজার দরকার। কিন্তু তা হচ্ছে না। অথচ বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনৈতিক অনেক পিলার থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে মাত্র একটি পিলার। তাহলো ব্যাংকিং খাত।’

তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিদেশে ফোকাস করছে। এটা ভালো। তবে আগে দেশের মানুষকে এই বাজার সম্পর্কে ফোকাস করতে হবে। আরও বেশি বেশি মানুষকে এই বাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের টার্গেট করা যেতে পারে।’

জিয়াউর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এ বিভাগের আরো খবর