সবজির বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
রাজধানীর ফার্মগেটে সোমবার বিকেলে কেআইবি চত্বরে তিন দিনের সবজি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় কৃষিমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, সবজির মূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না কেন? জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সবজির বিপণনে কিছুটা সমস্যা রয়েছে। পরিবহন চাঁদাবাজি, মধ্যস্বত্বভোগীসহ অনেক সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যা সমাধান করতে পারলে সবজির ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে।
‘সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার কাজ করছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সবাইকে কাজ করতে হবে যেন সবজির দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে।’
তিনি বলেন, ‘সামনে রোজা আসছে। শাকসবজির দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমি আশ্বস্ত করতে পারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমাদের সবজির যে উৎপাদন হয়েছে, তাতে রোজায় পণ্যের দাম বাড়বে না।’
‘দানাদার খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। এখন নিরাপদ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিত করতে কাজ করছি। পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে শাকসবজি, ফলমূল উৎপাদনে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। ফলে গত ১২ বছরে সবজির উৎপাদন বেড়েছে সাত গুণ, আর বর্তমানে ১ কোটি ৯৭ লাখ টন সবজি উৎপাদন করে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।’
সরকারের পক্ষ থেকে বারবার এ ধরনের পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হলেও আদতে কাঁচাবাজারে কমানো যাচ্ছে না সবজির দাম। ভরা মৌসুমেও অনেক বেশি দামে সবজি কিনতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
সবজি রপ্তানির সম্ভাবনা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘সবজি রপ্তানির সম্ভাবনা অনেক। রপ্তানি বাড়াতে আমরা কাজ করছি। অচিরেই সবজি রপ্তানি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম উৎসে পরিণত হবে।’
কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার শুরু হওয়া এ সবজি মেলা চলবে বুধবার পর্যন্ত। তিন দিনব্যাপী এ মেলায় ৫২টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্টল অংশ নিয়েছে।
জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার তথ্যমতে, সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়, চীন প্রথম ও ভারত দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। কৃষি খাত থেকে বর্তমানে জিডিপির ১৩ দশমিক ২৯ শতাংশ আসে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯ লাখ ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৮ হাজার মেট্রিক টন সবজি উৎপাদন হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৯ লাখ হেক্টর জমিতে সবজি উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৮৪ লাখ ৪৭ হাজার টন।