করোনা সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠা ১০ শতাংশ মানুষ নতুন করে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। এ কারণে করোনা মহামারির এই সময়ে ডায়াবেটিসের প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে।
জাতীয় ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবসের আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধে এমন তথ্য জানান বারডেম জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ফারুক পাঠান। বারডেম হাসপাতাল অডিটরিয়ামে সোমবার দুপুরে এই আলোচনার আয়োজন করা হয়।
ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বারডেম কার পার্কিংয়ের নিচ থেকে টেনিস ক্লাবের গেট পর্যন্ত সচেতনতামূলক স্লোগানসংবলিত প্লাকার্ড হাতে অবস্থান, সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বারডেম ক্যাম্পাস এবং এনএইচএন ও বিআইএইচএসের বিভিন্ন কেন্দ্র সংলগ্ন স্থানে বিনামূল্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হয়। এ ছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে ‘কান্তির বিশেষ প্রকাশনা, সচেতনতামূলক পোস্টার-লিফলেট প্রকাশ ও বিতরণ করা হয়।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ফারুক পাঠান বলেন, ‘কোভিড সংক্রমিতদের একটি বড় অংশ নতুন করে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। সারাদেশে করোনা রোগীদের ওপর সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন চিত্র দেখা গেছে। করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে দেশের ৫ থেকে ১০ শতাংশ মানুষ নতুন করে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে।
‘করোনা সংক্রমণে অসুস্থতা কতটা জটিলতা তৈরি করবে সেটা নির্ভর করে রোগী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কী না এবং তা কোন মাত্রায় আছে। এছাড়া কোভিড আক্রান্ত হওয়ার কারণে শরীরের কোষগুলো ধ্বংস হওয়ায় করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর মারাত্মক আকার ধারণ করছে ডায়াবেটিস।’
তিনি বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিক ফেডারেশনের (আইডিএফ) মতে, বর্তমানে সারাবিশ্বে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা ৫৪ কোটি। ২০৪৫ সালে এই সংখ্যা ৭৮ কোটিতে দাঁড়াবে। দেশে এই রোগীর সংখ্যা ৮৪ লাখ। সেই ধারাবাহিকতায় ২০৪৫ সালে সংখ্যাটি আনুমানিক ১ কোটি ৫৩ লাখ হওয়ার কথা। তবে বাস্তব চিত্র আরও ভয়াবহ হবে। ফলে রোগটি সম্পর্কে এখনই সতর্ক হতে হবে।’
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির (বাডাস) সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খানেরর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ।
বাডাস মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় ৮৪ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে ধারণা করা হয়। আর ডায়াবেটিস সেবায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমিতি হলো বাডাস। দেশের ৫৬ লাখ অর্থাৎ ৬০ ভাগ রোগী এই সমিতি থেকে সেবা নিচ্ছে।
৭০ শতাংশ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়। তবে রোগটি সম্পর্কে সচেতন না হলে, নিয়ন্ত্রণ না করলে এটি রোগীর কিডনি, চোখ, হার্ট, পা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হতে পারে।’
আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকী। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বারডেমের মহাপরিচালক অধ্যাপক এমকেআই কাইয়ুম চৌধুরী।