বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যৌন হয়রানির অভিযোগে ‘ভুতুড়ে মানববন্ধন’

  •    
  • ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৬:৫৪

ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের প্রধান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ঠিকমতো পড়াশোনা না করায় হাসান জানত যে পাস করবে না। তাই আমাকে চাপ দেয়ার জন্য মিছিল বের করিয়েছিল। তবে আমি চাই নিজ যোগ্যতায় পাস করে হাসান চিকিৎসক হোক। আমার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে করা মানববন্ধনের সঙ্গে ওই মিছিলের যোগসূত্র আছে।’

ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। সেই শিক্ষকের অপসারণ ও বিচার দাবিতে হয়েছে মানববন্ধনও।

তবে কে সেই শিক্ষার্থী এবং মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের প্রধান আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে তার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ কী তা জানা যায়নি। মানববন্ধনের পর অনেকেই আবার এতে অংশ নেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।

শিক্ষকরা মনে করছেন, কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসানের নির্দেশে আজাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে মানববন্ধন হয়েছে। যৌন হয়রানির অভিযোগটি আসলে সত্য নয়।

হাসানের দাবি, তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।

গত বুধবার দুপুরে আজাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন প্রায় ৩০ শিক্ষার্থী। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, মেডিক্যাল কলেজের ম-৫৩ ব্যাচের এক ছাত্রীকে অধ্যাপক আজাদ যৌন হয়রানি করেছেন। তার কারণে ওই ছাত্রী কলেজ ছেড়ে চলে গেছেন।

ম-৫৩ ব্যাচের বিভিন্ন শিক্ষার্থীকে বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে তারা জানান, এমন কোনো ঘটনার কথা তারা জানেন না। এমনকি কে ওই শিক্ষার্থী তাও তাদের জানা নেই।

মানববন্ধনের প্রতিবাদে রোববার দুপুরে পাল্টা মানববন্ধন করেন কলেজের শিক্ষকরা। তারা দাবি করেন, এই মিথ্যা অভিযোগের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তি দিতে হবে।

যৌন হয়রানির অভিযোগে মানববন্ধনের প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি: নিউজবাংলা

শিক্ষকদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে অধ্যক্ষ চিত্ত রঞ্জন দেবনাথের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন ম-৫৩ ব্যাচের সব শিক্ষার্থী।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, শিক্ষক আজাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এই অভিযোগের সঙ্গে আমাদের ব্যাচের নাম যুক্ত হওয়ায় আমরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ।

স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ‘বুধবারের মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের কেউ ম-৫৩ ব্যাচের ছিল না। তাদের এ বিষয়ে জানানোও হয়নি।’

এমন দাবির পর মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। অনেকেই মানববন্ধনে অংশ নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, সেদিন তাদের জোর করে মানববন্ধনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। না গেলে নানা রকম সমস্যা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। কে তাদের বাধ্য করেছিল তা বলেননি কোনো শিক্ষার্থী।

এর পেছনে ছাত্রলীগ নেতা হাসান জড়িত থাকতে পারে জানিয়ে আজাদ নিউজবাংলাকে জানান, ২০২১ সালের ফাইনাল প্রফেশনাল পরীক্ষায় ম-৫৩ ব্যাচের হাসান গাইনি ও সার্জারি বিষয়ে ফেল করেন। চলতি মাসে পরবর্তী ব্যাচের সঙ্গে তাকে আবার পরীক্ষায় বসতে হয়।

১৩ ফেব্রুয়ারি হাসানের সার্জারি বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। তার আগের দিন অন্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার চলার সময় তার অনুসারী ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী মিছিল বের করেন।

আজাদ বলেন, ‘ঠিকমতো পড়াশোনা না করায় হাসান জানত যে পাস করবে না। তাই আমাকে চাপ দেয়ার জন্য মিছিল বের করিয়েছিল। তবে আমি চাই নিজ যোগ্যতায় পাস করে হাসান চিকিৎসক হোক। আমার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে করা মানববন্ধনের সঙ্গে ওই মিছিলের যোগসূত্র আছে।’

একই অভিযোগ সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার সাইফুল মালেকের। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেয়ার জন্য চাপ দিতে সেদিন মিছিল করা হয়েছিল। এভাবে সম্ভব না বুঝতে পেরে হাসান কয়েকজনকে চাপ দিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগে মানববন্ধন করিয়েছে।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে হাসান বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। সেদিনের মিছিলে আমি ছিলাম না বা আমি করতে বলিনি। যৌন হয়রানির অভিযোগের বিষয়েও আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিলেই সব স্পষ্ট হবে।’

কলেজের অধ্যক্ষ চিত্ত রঞ্জন দেবনাথ বলেন, ‘বুধবার মানববন্ধনের সময় আমি কলেজে ছিলাম না। কারা কারা সেখানে ছিল তা স্পষ্ট নয়। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি তদন্ত করতে গাইনি বিভাগের অধ্যাপক তায়েবা তানজিন মির্জাকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

‘পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে সেই অনুযায়ী বিচার করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর