গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিএনপির হয়ে কোনো মতামত দেয়ার ক্ষমতা রাখেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার একজন খাঁটি লোক বলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী যে মন্তব্য করেছেন, তার প্রতি ইঙ্গিত করে সোমবার এ কথা বলেন ফখরুল।
বিএনপি নেতা এদিন দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর নতুন বাজারে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক বিক্ষোভে বক্তব্য রাখছিলেন। বিদ্যুৎ, গ্যাস, চাল, ডাল তেলসহ নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং টিসিবির মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে সর্বত্র পণ্য সরবরাহের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
ফখরুল সেখানে অন্যান্য প্রসঙ্গের পাশাপাশি নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে জাফরুল্লাহর বক্তব্য নিয়েও কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির সাথে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপির কোনো মতামত দেয়ার ক্ষমতা তিনি রাখেন না। এটা তার নিজস্ব বক্তব্য।’
সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠন করা প্রথম দু্টি নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় বিএনপির অংশগ্রহণ থাকলেও এবার দলটি রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেয়নি, সার্চ কমিটিকে কোনো নামও দেয়নি। দলটি নির্বাচকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ফিরে গেছে।
এর মধ্যে শনিবার রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। এর প্রধান করা হয়েছে কাজী হাবিবুল আউয়ালকে, যার নাম কয়েকটি ছোট দলের পাশাপাশি প্রস্তাব করেছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের এই প্রতিষ্ঠাতা গত এক দশকে বিএনপির কাছাকাছি এসেছেন নানাভাবে। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনেও পর্দার আড়ালে ভূমিকা রাখেন তিনি। নিজেও এই জোটে যোগ দেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের পর জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রধান নির্বাচন কমিশনারের প্রশংসা করে বলেন, বিএনপির তাকে সহযোগিতা করা উচিত।
তবে ফখরুল বলেন, ‘তালবাহানা দেখিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে নেয়া যাবে না। বিএনপিকে আর মূলা ঝুলিয়ে বোঝানো যাবে না।’
বিএনপির ৬০০ নেতাকর্মীকে সরকার গুম করিয়েছে, এক হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘জনগণ একদিন তার জবাব দেবে।’
সরকার প্রতারণার মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে আছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সরকার বলেছিল ১০ টাকা কেজি মানুষ চাল পাবে। কিন্তু বর্তমান সময়ে ৬০ টাকার নিচে কোনো চাল নেই। সয়াবিন তেল হয়েছে ২০০ টাকা লিটার। মানুষের মধ্যে হাহাকার শুরু হয়েছে।’
ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ্ ওয়ারেস আলী মামুন, শরীফুল আলম, মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দসহ অন্যান্যরা।