সাতক্ষীরার শ্যামনগরে পাঁচ দিনেও খোঁজ মেলেনি করোনার টিকা নিতে গিয়ে নিখোঁজ মাদ্রাসাছাত্রী হিরা আক্তারের।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সুশীলন টাইগার পয়েন্ট কেন্দ্রে টিকা নিতে গিয়ে নিখোঁজ হয় হিরা। এ ঘটনায় পরদিন ওই ছাত্রীর পরিবার শ্যামনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে।
হিরা আক্তার উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের হযরত আলী মোড়লের মেয়ে ও গাবুরা দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী।
এ দিকে নিখোঁজ হিরার খোঁজে পরিবারের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেই ঘটনার সুযোগ নিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে একটি প্রতারণা চক্রের বিরুদ্ধে। চক্রটি এরই মধ্যে তার পরিবারের কাছ থেকে অর্থও হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজের একদিন পর ০১৬১২-৯৯১৭৯৭ নম্বর থেকে হিরার খালার কাছে কল দিয়ে বলা হয়, ‘তোমাদের মেয়ের খোঁজ নিতে হলে আমাকে ইম্যুতে অ্যাড করে ভিডিও কলে কথা বল।’
এরপর শনিবার বিকেল ৫টার দিকে ০১৭১৪-৮৭৯৫৪২ নম্বর থেকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবিয়ার রহমানের কাছে ফোন করে কুষ্টিয়া থানার পরিচয় দিয়ে বলা হয়, ‘আমাদের কাছে আপনার মেয়ে আছে। ০১৩০৯-০১০৫১২ নম্বরে বিকাশ করে খরচের টাকা পাঠান, আর এসে আপনার মেয়ে নিয়ে যান।’
এরপর ওই নম্বরে ২৫০০ টাকা দেয়ার আধাঘণ্টা পর নম্বরগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে শ্যামনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সানওয়ার হুসাইন মাসুম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হিরা আক্তারকে খুঁজে বের করতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি হিরা আক্তার নিখোঁজের ঘটনায় তার মামা আবিয়ার রহমান জানান, ওইদিন মাদ্রাসার শিক্ষকদের সঙ্গে সুশীলন কার্যালয়ে টিকা দিতে যায় হিরা। তিনটি ট্রলারে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর থেকে হিরার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। মাদ্রাসার শিক্ষকরাও কিছু বলতে পারছেন না।
গাবুরা দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা লিয়াকত আলী বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়ার দিন নির্ধারণ করা ছিল ওই দিন। মাদ্রাসা থেকে ২৭৫ জন ছাত্র-ছাত্রীকে টিকা দিতে নিয়ে যাওয়া হয়। আটজন শিক্ষক তাদের দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন।
‘সুশীলন টিকা কেন্দ্রের লাইন ছিল অর্ধ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। এ সময় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বিকেল সাড়ে ৪টায় টিকা দেয়া শেষ হয়। এর মধ্যে পাশের একটি প্রাইমারি স্কুলে দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তখন থেকেই হিরাকে আর পাওয়া যায়নি।’