বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হাতি তাড়াতে ফের কোটি টাকার বৈদ্যুতিক বেড়া প্রকল্প   

  •    
  • ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১০:১৩

প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী জানান, আবারও কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ কিলোমিটার সোলার ফেন্সিং করার উদ্যোগ নিয়েছে বন বিভাগ। আগের প্রকল্পের সমস্যা দূর করে নতুন করে কার্যকর সোলার ফেন্সিং লাইন করা হবে। আগেরগুলোও ঠিক করা হবে।

পাঁচ বছর আগে লোকালয়ে হাতির প্রবেশ রুখতে শেরপুরে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় বৈদ্যুতিক বেড়া। কিন্তু পরিকল্পনা আর লোকবলের অভাবে এটি কোনো কাজেই আসেনি। এরই মধ্যে কোটি টাকা ব্যয়ে আবার সোলার ফেন্সিং স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে বন বিভাগ।

শেরপুরের শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ীর বিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থিত গারো পাহাড়। এ পাহাড়ে আদিকাল থেকেই হাতির বিচরণ রয়েছে। যেসব এলাকা দিয়ে হাতি চলাচল করত ও আগের গভীর বনাঞ্চলে এখন গড়ে উঠেছে ঘরবাড়ি।

জানা গেছে, হাতি তার পূর্ব স্বভাবগত কারণে আগের চেনা রাস্তা খুঁজতে ও খাবার সন্ধানে চলে আসছে এসব লোকালয়ে। এ কারণে পাহাড়ি এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরেই হাতির আক্রমণের শঙ্কায় দিন কাটছে মানুষের।

লোকালয়ে ঢুকে হাতি ক্ষতি করছে মানুষের ফসল, বাড়িঘর ও গাছপালা। জানমাল বাঁচাতে হাতি তাড়াতে গিয়ে প্রতি বছর এটির আক্রমণে মারা পড়ছে মানুষ। তবে মারা পড়ছে হাতিও। একটি হিসাবে দেখা গেছে, গত চার মাসে চারটি হাতির মৃত্যু হয়েছে। ১৯৯৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত হাতির আক্রমণে ৯০ জন মানুষ মারা গেছে। এ সময়ে হাতির মৃত্যুর সংখ্যা অর্ধশত।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী এলাকায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে ২০১৭ সালে এক কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১১ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক বেড়া নির্মাণ করে সরকার।

উদ্দেশ্য ছিল, সোলার ফেন্সিংয়ের তারে শক খেয়ে হাতি চলে যাবে। এতে রক্ষা পাবে মানুষ, ফসল, বাড়িঘর এমনকি হাতিও।

বৈদ্যুতিক বেড়া কাজ না করায় সেগুলো টপকে নির্বিচারে হাতি ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। ছবি: নিউজবাংলা

স্থানীয়দের অভিযোগ, শুরু থেকেই সোলার ফেন্সিং কোনো কাজই করছিল না। এর তারে শক খেয়ে হাতি যাচ্ছিল না। নানা অনিয়মের কারণে এগুলো অকেজো পড়ে রয়েছে। কয়েক কর্মকর্তার যোগসাজশে নিম্নমানের কাজ করে বিল উঠিয়ে সটকে পড়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।

এরই মধ্যে আবারও কোটি টাকা ব্যয়ে সোলার ফেন্সিং করার উদ্যোগ নিয়েছে বন বিভাগ। আগে সোলার ফেন্সিং নিয়ে দুর্নীতিকারীদের বিচার করতে হবে। না হলে আবারও সোলার ফেন্সিংয়ের নামে কোটি টাকা লুটপাট হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, এখানে প্রকল্পের কয়েকটি খুঁটি আর ছেঁড়া জিআই তার ছাড়া আর কিছু নেই। ব্যাটারিগুলোর একটিরও কোনো হদিস নেই। ফলে কোটি টাকা ব্যয়ে করা এ সোলার ফেন্সিং ব্যবস্থা ভেস্তে গেছে।স্থানীয় তাওয়াকুচা এলাকার ইকনাস সাংমা বলেন, ‘ফেন্সিং শুধু পাহাড়িদের জন্য করা হয়েছিল, যা আমাদের কোনো কাজে আসেনি। এসব উদ্যোগ শুধু লোক দেখানো। সরকারের টাকা আত্মসাৎ করার ফন্দি মাত্র।’

ছোট গজনী এলাকার মো. রমজান আলী বলেন, 'এ বেড়া আমাদের কোনো কাজে আসেনি। সরকারের লাখ লাখ টাকা মেরে দিয়েছে বন বিভাগের লোকজন। ফেন্সিংয়ের সঙ্গে যে ব্যাটারিগুলো ছিল, সেগুলো পর্যন্ত নেই। দেখাশোনার অভাবে সব চুরি হয়ে গেছে।’বন বিভাগের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী জানান, আবারও কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ কিলোমিটার সোলার ফেন্সিং করার উদ্যোগ নিয়েছে বন বিভাগ। আগের প্রকল্পটি পাইলট প্রকল্প ছিল। সেখানে যে যে সমস্যা ছিল তা দূর করে নতুন করে কার্যকর সোলার ফেন্সিং লাইন করা হবে। আগের লাইনগুলোও ঠিক করা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর