বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইউএনওর বিরুদ্ধে সই জালিয়াতির মামলা

  •    
  • ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২৩:২২

মামলার বাদী আবদুল মান্নান স্বপন জানান, গত বছরের ২৮ জুলাই নিজের পুরনো একটি পুকুর সংস্কার করছিলেন। এ সময় ইউএনও মোরশেদা খাতুন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বালু তোলার অভিযোগ এনে তাকে ৫০ হাজার টাকা এবং অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। পরে তিনি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে আপিল করলে অভিযোগ গঠন ফরমে নকল স্বাক্ষর দেখতে পান।

ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানার পর সেই আদেশে আসামির সই জাল করার অভিযোগ এনে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সহ চারজনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা করা হয়েছে।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে কিশোরগঞ্জের বিশেষ জজ আদালতে মামলাটি করা হয় বলে তথ্য মিলেছে। পরে জেলা ও দায়রা জজ মো. সায়েদুর রহমান অভিযোগকারীর জবানবন্দি গ্রহণ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের ময়মনসিংহ কার্যালয়কে তদন্তের নির্দেশ দেন।

অভিযোগটি করেছেন বাজিতপুর উপজেলার আবদুল মান্নান স্বপন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান স্বপন। তিনি ধমনি সাহিত্য নামে একটি পত্রিকার সম্পাদকও।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে বাজিতপুরের ইউএনও মোরশেদা খাতুনকে। আসামি করা হয়েছে ইউএনও অফিসের সুপার জহর লাল, দিলালপুর তহসিল অফিসের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. মাহফুজুল হাসান ও অফিস সহায়ক সাব্বির আহমেদকে।

মামলার বাদী আবদুল মান্নান স্বপন জানান, গত বছরের ২৮ জুলাই নিজের পুরনো একটি পুকুর সংস্কার করছিলেন। এ সময় ইউএনও মোরশেদা খাতুন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বালু তোলার অভিযোগ এনে তাকে ৫০ হাজার টাকা এবং অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। টাকা না দিলে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাবেন বলে জানান।

তিনি বলেন, ‘আমি মান সম্মানের ভয়ে টাকা দিতে বাধ্য হই। পরে আমি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে আপিল করি। তখন অভিযোগ গঠন ফরমে আমার নকল স্বাক্ষর দেখতে পাই। স্বাক্ষর দেখে বিস্মিত হয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করি।’

স্বপন বলেন, ‘ইউএনও সাহেব তার অফিস সুপার জহলাল সূত্রধর, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান, পিয়ন সাব্বিরের পরিচয় গোপন করে আমার স্বাক্ষর তাদের সামনে দেয়া হয়েছে মর্মে তাদেরকে সাক্ষী করা হয়েছে। যেটা জালিয়াতি এবং প্রতারণা।’

৫ সেপ্টেম্বর তিনি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আপিল করেন। ১৩ অক্টোবর তার নিষ্পত্তি হয়। সেখানে তাকে জরিমানার টাকা ফেরত দিতে বলা হয়। কিন্তু সে টাকা এখনও দেয়া হয়নি।

স্বপন বলেন, ‘টাকা বড় কথা নয়। আমাকে যে হয়রানি করা হয়েছে সেটার বিচার হলেই আমি খুশি।’

তার অভিযোগ, তিনি ইউএনওর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের গঠনমূলক সমালোচনা করেন। ফেসবুকেও তার কর্মকাণ্ড নিয়ে মন্তব্য করেন। মূলত এ কারণেই তিনি সুযোগ বুঝে তার ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন।

স্বপনের আইনজীবী আবদুল কুদ্দুস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মামলার বাদী এলাকায় বিভিন্ন মাধ্যমে অনিয়ম/দুর্নীতির বিরোদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছিলেন। মূলত এ কারণে ক্ষুদ্ধ হয়ে গত বছরের ২৮ জুন ইউএনও সাহেব তার ব্যক্তিগত পুকুরে যান। সেখানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

‘পরে বাদী সেটা নিয়ে আপিল করেন। আপিলের পরে মূল নথি তলব করে আদালত। মামলার বাদী দেখতে পান, যেখানে তার স্বাক্ষর থাকার কথা সেখানে তার নামটা লিখে রাখছে অন্য কেউ। এমনকি যে নামটা লিখে রেখেছে সে বাদীর কাছে স্বীকারও করেছে৷ এ প্রেক্ষাপটে আপিল মঞ্জুর হয়। তাকে জরিমানার টাকা ফেরত দিতে বলা হয়।’

তিনি বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা, সরকারি প্রভাব খাটিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জালিয়াতি করে যে হেনস্থা ও হয়রানি করেছেন, বাদী সেটার বিচার চান।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও মোরশেদা খাতুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই অভিযোগের বিষয়ে কোনো কাগজ আমি পাইনি৷ যিনি আমার বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলা করেছেন, জরিমানা বইয়ে ওনার স্বাক্ষর রয়েছে। সেটা মাননীয় আদালত পরীক্ষা করলেই প্রমাণ মিলবে।’

এ বিভাগের আরো খবর