বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

২০ বছর আগের ছবি নিয়ে মায়ের খোঁজে হন্যে যুবক

  •    
  • ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২০:২১

মুস্তাকিনের চাচা আইনজীবী মেহেদী হাসান বলেন, ‘মুস্তাকিন তার মায়ের সন্ধান করছে। ওই ছবি দুটো তার মায়ের। তার বাবার সঙ্গে মায়ের বিচ্ছেদ হয়।’

২০ বছর পর মায়ের সন্ধানে যশোরের অলিগলিতে ঘুরছেন মুন্সীগঞ্জের যুবক মুস্তাকিন আহমেদ। ২৫ বছরের এ যুবক জানেন না মায়ের নামও। স্মৃতি হিসেবে কেবল সঙ্গে আছে মায়ের সঙ্গে কাটানো শিশু বয়সের কয়েকটি ছবি।

ছবিগুলো বড় করে পোস্টার বানিয়ে ‘মাকে খুঁজছি’ এমন শিরোনামে শহরের সড়কের মোড়ে, বৈদ্যুতিক খুঁটিতে, বাড়ির দেয়ালে সাঁটছেন সেগুলো। বিলিও করছেন সাধারণ মানুষের মধ্যে।

পোস্টারে তিনি লিখেছেন, ‘এই নারী আমার মা, ২০ বছর হলো তিনি হারিয়ে গেছেন। আমার মায়ের বাড়ি যশোর জেলায়। মাকে কোনো স্ব-হৃদয়বান ব্যক্তি চিনে থাকলে আমাকে ফোন দিয়ে তাকে খুঁজে পেতে দয়া করে সাহায্য করুন।’

পোস্টারে দুটি মোবাইল নম্বরও দেয়া আছে। গত দুই দিন ধরে এভাবেই মায়ের খোঁজ করেও কোনো সূত্র না পেয়ে হতাশ মুস্তাকিন।

তার বাড়ি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কামারগাঁও গ্রামে। তার বাবা মৃত আবদুল খালেক। মুন্সীগঞ্জের দোহায় কুয়েত মাদ্রাসা থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন। বেঁচে থাকার তাগিদে মাওয়া ফেরিঘাটে এখন ডাব বিক্রি করেন তিনি।

শনিবার বিকেলে যশোর শহরের মুজিব সড়কে মুস্তাকিনকে দেখা যায় বিভিন্ন দেয়াল ও খুঁটিতে ‘মাকে খুঁজছি’ শিরোনামে পোস্টার লাগাতে।

মুস্তাকিন জানান, তার বাবা আবদুল খালেক প্রথম স্ত্রীকে রেখে ভারতে চলে যান প্রায় ২৫ বছর আগে। গুজরাটে অবস্থানকালে তার মায়ের সঙ্গে পরিচয়। সেখানেই বিয়ে। তার জন্মও সেখানে।

তার বয়স যখন পাঁচ বছর তখন বাবা-মায়ের সঙ্গে ফেরেন দেশে। ফেরার পর সৎমা তাদেরকে মেনে নিতে পারেননি। একপর্যায়ে মোস্তাকিনকে সৎমায়ের কাছে রেখে তার মাকে তালাক দেন বাবা।

মুস্তাকিন বলেন, তার নানাবাড়ি যশোরে শুধু এতটুকু তথ্য জানতেন। এক সপ্তাহ আগে বাড়ির পুরোনো বাক্সে অনেকগুলো পুরোনো ছবি পান। এর মধ্যে দুটি ছবিতে দেখতে পান এক নারীর কোলে ও পাশে একটি ছেলে। আর সেই ছবিটি ভারতের কোনো এক জায়গার।

মুস্তাকিনের এক চাচা মেহেদী হাসান তাকে নিশ্চিত করেন, এই ছবি দুটি তার মায়ের। এরপর মায়ের সন্ধানে নেমে পড়েন রাস্তায় তিনি। গত শুক্রবার থেকে তিনি যশোরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন।

মাকে খুঁজে পেতে মুস্তাকিন শহরের বিভিন্ন খুঁটিতে, বাড়ির দেয়ালে সাঁটছেন পোস্টার। ছবি: নিউজবাংলা

মুস্তাকিন আরও বলেন, বাবা ও সৎমায়ের সঙ্গে ২০ বছর আগে যশোরে এসেছিলেন। শহরের একটি সিনেমা হলসংলগ্ন কবরস্থানের পাশের একটি বাড়িতে তাকে রেখে তার মাকে ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল বিচ্ছেদ বাবদ। তখনও তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয়নি তাকে। এতটুকুই স্মৃতি মনে আছে তার।

মুস্তাকিনের সৎমা রেশমা খাতুন ফোনে বলেন, ‘মুস্তাকিনের বয়স যখন ৪ বা ৫ বছর তখন তার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। আমার দেবররা ২০ হাজার টাকা দেয় মোস্তাকিনের মাকে। তিনি মোস্তাকিনকে আমার কাছে রেখে চলে যান।

‘ওর বাবা মারা গেছে কয়েক বছর আগে। তিনি কখনও মুস্তাকিনের নানাবাড়ির ঠিকানা বলেননি। শুধু এইটুকু জানি তাদের বাড়ি যশোরে ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘মুস্তাকিনের মা আবারও ভারতে চলে গেছে হয়তো। ওকে বলেছি তোর মা বেঁচে থাকলে ফিরে আসবে। যদি ফিরে আসে, তার থাকার জায়গা করে দেব।’

মুস্তাকিনের চাচা আইনজীবী মেহেদী হাসান বলেন, ‘মুস্তাকিন তার মায়ের সন্ধান করছে। ওই ছবি দুটো তার মায়ের। তার বাবার সঙ্গে মায়ের বিচ্ছেদ হয়।’

এ বিভাগের আরো খবর