বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মুক্তিযুদ্ধ, করোনাভাইরাস নিয়ে অপপ্রচারের অভিযোগে সুইডিশ-বাংলাদেশের সাংবাদিক নেত্র নিউজ সম্পাদক তাসনিম খলিল, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও আলোচিত সামিউল ইসলাম খান ওরফে সায়ের জুলকারনাইন ওরফে সামিসহ সাতজনের বিচার শুরু হয়েছে।
বিচার শুরুর আদেশের দিন আদালতে হাজির না হওয়ায় কার্টুনিস্ট কিশোরের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে।
রোববার দুপুরে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। এর ফলে আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো। এই মামলায় আগামী ৭ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণের জন্যও তারিখও ঠিক করেছেন তিনি।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন ব্লগার আশিক মোহাম্মাদ ইমরান ও মো. ওয়াহিদুন্নবী, রাষ্ট্রচিন্তার মো. দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন।
আসামির মধ্যে সামি ও তাসনিম খলিল দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। আশিক মোহাম্মাদ ইমরান ও মো. ওয়াহিদুন্নবী মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন।
দিদারুল আলম ও মিনহাজ মান্নান জামিনে থেকে আদালতে হাজির হন। তাদের পক্ষে আইনজীবীরা অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। তবে তাদের অব্যাহতির আবেদন গ্রহণ না করে সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন বিচারক। পাশাপাশি এই দুই আসামির জামিন বহাল রাখেন।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামিম।
গত বছরের ১০ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) উপপরিদর্শক আফছর আহমেদ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
এতে বলা হয়, কার্টুনিস্ট কিশোর তার ‘আমি কিশোর’ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনামূলক কার্টুন-পোস্টার পোস্ট করতেন। মুশতাক তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কিশোরের সেসব পোস্টের কয়েকটি শেয়ার করতেন।
আসামিরা ‘আই এম বাংলাদেশি’ নামে ফেসবুক পেজে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ন করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়েছে, যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়।
হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে তাসনিম খলিল, শায়ের জুলকারনাইন, শাহেদ আলম, আসিফ মহিউদ্দিনের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও উল্লেখ করা হয় মামলায়।
২০২০ সালের ৫ মে র্যাব-৩-এর ওয়ারেন্ট অফিসার আবু বকর সিদ্দিক রমনা থানায় কার্টুনিস্ট কিশোর, মোস্তাক আহমেদ, দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া, মিনহাজ মান্নানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।
মামলায় তাদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, মহামারি করোনাভাইরাস সম্পর্কে গুজব, রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে তারা রাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন মর্মে অভিযোগ আনা হয়।