ঢাকা আইনজীবী সমিতি (বার) নির্বাচনে ভোট চলাকালে কোনো অভিযোগ না তুললেও ফল প্রকাশ করার পর কারচুপির অভিযোগ করেছে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেল।
রোববার ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার ভোটের ফল পাল্টে দেয়াসহ নানা অভিযোগ আনেন।
তার দাবি, বুথে ঢুকে আওয়ামী লীগপন্থি প্যানেলের পক্ষে ভোট কাটা হয়েছে। ভোটাররা প্রতিবাদ করলে তাদেরও নানাভাবে অপমান-অপদস্থ করা হয়। পাশাপাশি জাল ভোটের কারণে জয় পেয়েছেন সরকার সমর্থকরা।
ভোটের দুই দিন নীল প্যানেলের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা না হলেও ফল প্রকাশের পর কেন এই অভিযোগ আনা হচ্ছে, সে প্রশ্ন করা হলেও মাসুদ আহম্মেদ প্রশ্ন এড়িয়ে যান।
গত ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটির ২০২২-২৩ সালের নির্বাচনে ভোট হয়। এতে আওয়ামী লীগপন্থি সাদা প্যানেল ও বিএনপিপন্থি নীল প্যানেল অংশ নেয়।
শনিবার ঘোষণা করা ফল অনুযায়ী ২৩টি পদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ১৭টি পদে জয় পেয়েছে। অন্যদিকে দুটি সম্পাদকীয়সহ ছয় পদে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেল জয় পেয়েছে।
শনিবার সকাল ৯টার পর ভোট গণনা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু ফল ঘোষণা করেন।
ফল ঘোষণার পরদিন বিএনপিপন্থিদের প্যানেলের পক্ষ থেকে করা সংবাদ সম্মেলনে এই ভোটে নির্বাচন কমিশনার আবদুল্লাহ আবুর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।
জনাব আবু ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এবং আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
মাসুদ আহম্মেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম লিখিতভাবে আব্দুল্লাহ আবুর নিয়োগের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রদান করে। নীল প্যানেলের সব প্রার্থীও তার প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিট এবং সাধারণ আইনজীবীদের মনে সংশয় হয়, আব্দুল্লাহ আবু দলীয় প্রভাবের বাইরে গিয়ে কোনোভাবেই নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করার সক্ষম হবে না। বাস্তবেও সব আশঙ্কা সত্য হয়েছে। সব অনিয়মের শঙ্কা এবং দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করে বিতর্কিত নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব ধারণাকে সত্য প্রমাণ করে আব্দুল্লাহ আবু ২০২২-২৩ এর নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছেন।’
তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনে দুই দিন জাল ভোটের মহোৎসব হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ব্যাজ পরে বুথে ঢুকে সাদা প্যানেলের প্রার্থীর পক্ষে জোট করে ভোট কেটে নেয়া হয়েছে। ভোটাররা প্রতিবাদ করলে তাদেরও নানাভাবে অপমান-অপদস্থ করা হয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করেন বলেও অভিযোগ করা হয়।
ঢাকার আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী, পরাজিত নীল প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী খোরশেদ মিয়া আলম, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সৈয়দ নজরুল ইসলামও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।