ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন ২০২০ সালের এইসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।
রোববার দুপুর ১টায় তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়া শুরু করেন।
সকাল ১০টায় ঢাকা কলেজের সামনে থেকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়। দুপুর ১২টায় তারা নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেন।
এর আগে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ রাখলে অনেক নিয়মিত শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবেন না- এমন ধারণা থেকে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর বন্ধ করা হয় দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ।
এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রথমে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিচ্ছুরা আন্দোলন করেন। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন ঘটেনি।
কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে আন্দোলনের সমন্বয়ক মহিদুল ইসলাম দাউদ বলেন, “আমরা গত ৩ মাস ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের দাবির পক্ষে ইতিমধ্যে শিক্ষামন্ত্রী, ইউজিসি এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক সমর্থন জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘সেকেন্ড টাইম’ দেয়ার বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য দিচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘সেকেন্ড টাইম ভর্তি পরীক্ষা এটা আমাদের অধিকার। স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় জাহাঙ্গীরনগর ও মেডিক্যালে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ রয়েছে। তাহলে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় কেন থাকবে না?
‘অতিদ্রুত আমাদের দাবি মেনে নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। না হলে আমরা ছাত্র-শিক্ষক অভিভাবকসহ সমাজের বিবেকবান মানুষদের সঙ্গে নিয়ে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব।’
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আবির মাহমুদ বলেন, ‘একবারে একজন শিক্ষার্থীকে কোনোভাবেই বিচার করা যায় না। তার মেধাকে কাজে লাগাতে আরও একবার সুযোগ দেয়া উচিত। অনেকের ইচ্ছা থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করার।
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে। পৃথিবীর বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে, যেগুলোর অবস্থান ৫০০-এর ভেতরে। আমরা চাই এই ন্যায্য দাবি মেনে নেয়া হোক।’
রাজধানীর ক্যামব্রিয়ান কলেজের শিক্ষার্থী রাফি হাসান বলেন, ‘পৃথিবীতে বড় বড় যেসব বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সবগুলোতেই সেকেন্ড টাইম আছে। শুধু আমাদের দেশেই নাই। যা চরম বৈষম্যমূলক। করোনার কারণে ২০২০ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা নানাভাবে ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছি। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে পরিবার, সমাজ থেকে কতটা লাঞ্ছনার শিকার হয়েছি, তা বলে বোঝাতে পারব না।
‘আমদের অধিকার ফিরিয়ে দিন। ঢাবিসহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দিন।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, আগামী ১২ মার্চের মধ্যে যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিনেট, সিন্ডিকেট, ভর্তি কমিটি ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সঙ্গে আলোচনা করে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার ঘোষণা না দেয়, তাহলে আগামী ১৩ মার্চ শাহবাগ মোড় অবরোধ করা হবে।