বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিল্প-সাহিত্য বিকশিত হলে এগোবে দেশ: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৪:০০

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষের কল্যাণে যা যা কাজ করার সেটা যেমন করে যাব, আর বাঙালি হিসেবে আমাদের যে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি এর চর্চাটা যাতে থাকে তার জন্য যতটুকু সহযোগিতা দরকার অবশ্যই আমি করব। প্রধানমন্ত্রী থাকাতে সুবিধা বেশি, করা যায় বেশি। তারপরও কিন্তু আমার কাছ থেকে সহযোগিতা সবসময় পাবেন, সেইটুকু আমি কথা দিতে পারি।’

শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে দেশের সম্পদ আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ সম্পদ যত বিকশিত হবে, দেশ ততই এগিয়ে যাবে। আর তাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শুধু নয়, বঙ্গবন্ধুকন্যা হিসেবে দেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চায় সব ধরনের সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।

ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রামসহ দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার গল্প নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার তাগিদও দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

তাতে নতুন প্রজন্ম স্বার্থপরের মতো নিজের কথা না ভেবে দেশে ও মানুষের কল্যাণে কাজ করবে বলে বিশ্বাস করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে রোববার সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে নির্মিত চিত্রকর্ম (স্ক্রল পেইন্টিং) ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: মহাজীবনের পট’ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।

দেশের কবি, সাহিত্যিক, চিত্রকর, সংস্কৃতিকর্মীদের নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অন্তত আমি এটুকু বলতে পারি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা হিসেবে বলব, আমার বাবা তো এ দেশকে ভালোবেসেছেন, এ দেশের মানুষকে ভালোবেসেছেন; আর সেই ভালবাসতে পারাটা আমি তার কাছে শিখেছি।

‘ফলে দেশের মানুষের কল্যাণে যা যা কাজ করার সেটা যেমন করে যাব, আর বাঙালি হিসেবে আমাদের যে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি এর চর্চাটা যাতে থাকে তার জন্য যতটুকু সহযোগিতা দরকার অবশ্যই আমি করব। প্রধানমন্ত্রী থাকাতে সুবিধা বেশি, করা যায় বেশি। তারপরও কিন্তু আমার কাছ থেকে সহযোগিতা সবসময় পাবেন, সেইটুকু আমি কথা দিতে পারি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটাই তো আমাদের বড় একটা সম্পদ, এটা বিশাল সম্পদ। এ সম্পদ যত বেশি বিকশিত হবে, ততই আমাদের দেশ আরও এগিয়ে যাবে।’

বাংলাদেশের আন্দোলন সংগ্রাম গৌরবগাঁথা শিশু-কিশোরদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এটা (ইতিহাস) জানলে পরে তারা যেমন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে, সেই সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশটাকে…স্বার্থপরের মতন নিজেকে ভালো রাখার কথা চিন্তা করবে না। দেশের মানুষের কল্যাণে কিছু করার একটা আগ্রহ সৃষ্টি হবে এটা চেতনা আসবে। যেটা আমাদের জন্য খুবই দরকার।’

দেশের সব অর্জন, অর্জনের পেছনের ত্যাগ, তিতিক্ষা কথা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘প্রজন্মের পর প্রজন্ম যদি জানতে পারে, তারাও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। তাদের ভেতরে যে মেধা জ্ঞান বা শৈল্পিক মন বা মনন এগুলো বিকশিত হবে। শুধু ধন সম্পদের দিকে ছুটে বেড়াবে না, কবে কোন ব্র্যান্ড পরবে সেদিকে ছুটে বেড়াবে না, তাদের শিল্পীমনের একটা বিকাশ হবে, এটা আমি বিশ্বাস করি।’

‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: মহাজীবনের পট’

জাতির পিতার বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর ১৫০ ফুট দীর্ঘ ক্যানভাসে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: মহাজীবনের পট’ শিরোনামের স্ক্রল পেইন্টিং বা চিত্রকর্মটি এঁকেছেন শিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশ। তার এই অনবদ্য কাজের জন্য বিশেষ ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি (বিকাশ) ২০২০ সালে শুরু করেছিলেন এ চিত্রকর্মটা আঁকা। করোনার কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তারপর তিনি যা করেছেন সেটা অস্বাভাবিক, অসাধারণ। তিনি ৯ মাসের ওপর কাজ করেছেন। প্রতিদিন ৮/৯ ঘণ্টা কাজ করেছেন। নিজের সব কাজ ছেড়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ওপরই তিনি স্ক্রল পেইন্টিং করেছেন।’

এই চিত্রকর্মের মধ্য দিয়ে শিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশ নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

তিনি বলেন, ‘আমি বলব বর্ণমালাহীন, শুধু শিল্পীর তুলির আঁচড়ে লেখা একটা ইতিহাস তিনি রচনা করেছেন। যে ইতিহাস একদিন স্বাধীনতা বিরোধীরা বা জাতির পিতার খুনিরা মুছে দিতে চেয়েছিল, সেটাকে কোনো অক্ষরের বর্ণমালায় না এনে শুধু শিল্পীর তুলিতে তিনি যে ইতিহাসকে তুলে ধরেছেন সেখানে বঙ্গবন্ধুর জীবনীর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম থেকে শুরু করে সবকিছু এর মাঝে ফুটে উঠেছে।’

শিল্পকর্মটিতে অভিভূত প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আর আমার ছোটবোন রেহানা আমরা সত্যিই বিস্মিত হয়েছি, কীভাবে একজন শিল্পী করতে পারে!’

চিত্রকর্মটিকে প্রদর্শনে সরকারের বিশেষ পরিকল্পনা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘টুঙ্গিপাড়ায় এমন একটা জায়গা আমি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি সেখানে, যারা টুঙ্গিপাড়ায় যান, বঙ্গবন্ধুর সমাধি দেখতে চান- এখানে তারাও যেন এই চিত্রকর্মটি দেখতে পারে তার জন্য একটা স্থান সৃষ্টি করা হবে। অনলাইনেও যাতে মানুষ এটি দেখতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হবে, আমরা নেব।’

সারা দেশে চিত্রকর্মটি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তার জীবনের সব কিছু ত্যাগ করেছিলেন এই বাংলাদেশের মানুষের জন্য। কখনও নিজের জীবনে তিনি কিছু চাননি। আমরা পরিবার, আমাদের কথা যতটা ভেবেছিলেন তার চেয়ে বেশি ভেবেছেন বাংলাদেশের মানুষের কথা। এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনই ছিল, তার একমাত্র লক্ষ্য।’

৭৫-এ ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে এদেশের ইতিহাস থেকে তার নাম সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘কিন্তু এটা মোছা যায়নি। তার কারণ আমাদের কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক- তারা তাদের লেখনীর মধ্য দিয়ে, তাদের তুলির আঁচড়ে, কবিতার মাধ্যমে, গানের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে এই নামটিকে কিন্তু চিরভাস্বর করে রেখেছেন।’

এ বিভাগের আরো খবর