কুমিল্লার একটি বাড়িতে দুই দিন ধরে চলেছে উৎসব। ছিল আলোকসজ্জা, পোড়ানো হয়েছে আঁতশবাজি, বিতরণ হয়েছে বিরিয়ানী। পুরো বাড়ি ছেয়ে ফেলা হয়েছে কুয়েত আর বাংলাদেশের পতাকায়।
উৎসবের উৎস খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, বিস্তর এ আয়োজন মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ কুয়েতের জাতীয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে। শুক্রবার ছিল কুয়েতের ৬১তম জাতীয় দিবস। আর ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশটির ৩১তম স্বাধীনতা দিবস।
দেবিদ্বার উপজেলার ইউছুফ গ্রামের এ বাড়িটির মালিক কুয়েত প্রবাসী ময়নাল হোসেন। গত ডিসেম্বরে তিনি বাড়িতে এসেছেন, কুয়েত ফিরে যাবেন মার্চ মাসে। গ্রামের বাড়িতে থেকেই তিনি কুয়েতের জাতীয় দিবস উদযাপন করছেন।
উৎসবের বিরিয়ানি পেয়ে আনন্দিত স্থানীয় আবদুল সাত্তার, হানিফ মিয়াসহ অনেকে।
খুশির কারণ জানতে চাইলে হানিফ মিয়া বলেন, ‘আমডার ময়নাল বহুত বছর ধইরা কুয়েত থাহে। আইজ কুয়েতে স্বাধীনতা দিবস। বেডায় বিরানী রাইন্ধা আমডারে দাওয়াত দিয়া এক পেকেট আতে তুইল্লা দিছে। আমডার মত এরুম শ পাঁচশ মানুষ আইজ বিরানী খাইছে।’
চলছে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন। ছবি: নিউজবাংলা
আয়োজক ময়নাল হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘ কুড়ি বছর কুয়েতে আছি। ডিসেম্বরে এসেছি, আবার মার্চে চলে যাব। কুয়েতের প্রতি একটা আলাদা ভালোবাসা কাজ করে। তাই কুয়েতের জন্য এসব করছি। দু’দেশের সম্পর্ক যেন ভালো থাকে, সেজন্য দোয়া মাহফিল করেছি।’
শুক্রবার দোয়া মাহফিলসহ বাড়িটিতে দিনভর ছিল নানা আয়োজন। শনিবার আত্মীয়স্বজনকে দাওয়াত দিয়ে খাইয়েছেন ময়নাল। খাসি জবাই করার পর যখন অতিথি বেড়ে গেছে তখন মাংস কিনে এনেছেন তিনি বাজার থেকে। আতিথেয়তার কমতি হতে দেননি তিনি।
বাংলাদেশ ও কুয়েতের পতাকার পাশাপাশি ব্যানার-ফেস্টুনে সাজানো বাড়িটি দেখতে আশেপাশের এলাকার লোকজনও ভিড় করছেন।
কুয়েত ১৯৬১ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে মুক্ত হওয়ার দিনটিকে জাতীয় দিবস এবং ১৯৯১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ইরাকি আগ্রাসন থেকে মুক্ত হওয়ার দিনটিকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। দেশটিতে এজন্য থাকে দুদিনব্যাপী নানা আয়োজন। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সরকারি-বেসকারি ভবন, সড়ক, পার্ক, শপিং মল, বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন জায়গা লাল-সবুজ-সাদা রঙে সাজানো হয়। উৎসবের এ আয়োজনে সামিল হন সেখানে অবস্থানরত প্রবাসীরাও।