পুলিশ বাহিনীতে থাকা মন্দ লোকদের বিরুদ্ধে জিহাদ চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
শনিবার বিকেলে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে ডিএমপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আইজিপি স্যারের নির্দেশে বাহিনী থেকে মন্দ লোকের বিরুদ্ধে জিহাদ চলছে। বাহিনীতে ভালো মানুষের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য এবং ভালো মানুষকে রিক্রুট করার জন্য পুলিশের আইজিপি দক্ষতার সঙ্গে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কারও কাছেই তিনি নতি স্বীকার করছেন না।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীতে মেধা অনুযায়ী যাদের চাকরি পাওয়া দরকার তাদেরই চাকরি হচ্ছে। একটি পয়সা খরচ করা ছাড়াই তাদের চাকরি হচ্ছে।’
সারা বাংলাদেশের পুলিশের পদোন্নতির বিষয়ে যে সিস্টেম চালু করা হয়েছে, তা যথোপযুক্ত উল্লেখ করে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা হচ্ছে। পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবীদের পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে। পুলিশ সদস্য তার যোগ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতি পাবেন। তদবির, টাকা-পয়সা খরচ করার কোনো সুযোগ এখানে নেই।
‘বাহিনীতে পদায়ন প্রক্রিয়া আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পদোন্নতিতে কোনো টাকা-পয়সা লেগেছে, এমন একটি বিষয় দেখাতে পারবেন না। এটা আমার প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের মতো ভেতর থেকে পরিবর্তনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। যে সদস্য দুর্ব্যবহার ও খারাপ আচরণ করছে, তার বিষয়ে ন্যূনতম কোনো ছাড় দেয়া হচ্ছে না। কিন্তু অনুরোধ থাকবে, ধারণার বশবর্তী হয়ে সব সময় আমাদের (পুলিশের) সমালোচনা করবেন না। আপনি থানায় আসেন, দেখেন পরিবর্তনটা কী।
‘যদি মনে করেন কাঙিক্ষত পরিবর্তন হয়নি, তবে আমাদের দরজা খোলা আছে, পরামর্শ দেন, কথা বলেন। একটি স্বাধীন দেশের স্বাধীন রাজধানীর পুলিশ বাহিনী প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের আন্তরিকতার কোনো কমতি নেই।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমার গায়ে যে পোশাক আছে, কালকে আমি আপনার লাইনে এসে বসব। কারণ আমার গায়ে ইউনিফর্ম থাকবে না, আমার সন্তানের গায়ে ইউনিফর্ম থাকবে না। সে সময় আমার ও আমার সন্তানের নিরাপত্তাও কিন্তু থেকে যাওয়া এই পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ওপর নির্ভর করে। আমরা এমন একটি বাহিনী তৈরি করে রেখে যেতে চাই- আপনার বিপদে আপনার পাশে দাঁড়াবে, আমার বিপদে আমার পাশে দাঁড়াবে।’
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পুলিশের যত কিছু পরিবর্তন হয়েছে, উন্নতি হয়েছে সব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই হয়েছে। পুলিশের প্রতিটা অর্জনের পেছনে প্রধানমন্ত্রীর হাত আছে।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘নগরীর কোথাও কোনো অপরাধ ও অবিচার হতে দেখলে আমাদের অবহিত করুন। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি, পাশে আছি। আপনার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়-অবিচারের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমাদের চেষ্টার কমতি নেই। আমি এটুকু আশ্বস্ত করতে পারি, নগরীর দুই কোটি মানুষের নিরাপত্তা দেয়ার লক্ষ্যে আমরা অক্লান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছি।’