গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে নারী শিক্ষক ও ছাত্রীরা বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করেছেন।
শনিবার বিকেল ৫ টার দিকে ছাত্রী হল থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সেখানে বক্তব্য রাখেন বাংলা বিভাগের শিক্ষক জাকিয়া সুলতানা, আইআর বিভাগের শিক্ষক নুসরাত তায়েফ ও জান্নাতুল ফেরদৌস, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক সোনিয়া পারভেজ, সমাজ বিভাগের শিক্ষক তামান্না রশিদসহ আরও অনেকে।
পরে ভিসি অধ্যাপক একিউএম মাহবুব ও প্রক্টর রাজিউর রহমান তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।
এ সময় শিক্ষক জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের শনাক্ত করে দ্রুত আটকের দাবি জানাই। অন্যথায় লাগাতার আন্দোলন চলবে।’
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নির্মাণাধীন ভবনে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। থানায় অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করলে তাদের ওপর হামলা হয়। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে সদর হাসপাতালে এবং একজনকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ওই ছাত্রীর একাধিক সহপাঠী জানান, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নবীনবাগের হেলিপ্যাড এলাকায় দাঁড়িয়ে বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলেন ওই ছাত্রী। সে সময় একটি অটোরিকশা থেকে নেমে সাত থেকে আটজন ছাত্র তাদের গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায়। সেখানে বন্ধুকে মারধর করে ওই ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন।
বুধবার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাজিউর রহমানের লিখিত আবেদনকে মামলা হিসেবে নেয় গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে মশাল মিছিল করেছেন প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী।