উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় ব্যাপক শিলাবৃষ্টির পর সাদা হয়ে যায় ফসলের ক্ষেত, মাঠ, বাড়ির আঙিনা। পড়ে যায় ধান, গমসহ বিভিন্ন ফসলের গাছ।
স্থানীয় কৃষকরা ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা জানালেও কৃষি বিভাগ বলছে উল্টো কথা। তারা বলছেন, শিলাবৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছে তা একেবারেই কম। হিসাব রাখার মতো নয়।
রংপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী ও লালমনিরহাটের বেশ কয়েকটি জেলায় শুক্রবার বিকেলে শুরু হয় ঝোড়ো বাতাস ও শিলাবৃষ্টি।
ঝড়ে ঝুপরি ঘর, টিনশেড বাড়ি, দোকান, বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছপালা-ফসল ক্ষতির মুখে পড়ে।
রংপুরের বেতগাড়ি এলাকার হাসান মির্জা বলেন, ‘বাড়ির সামনে শিলের স্তূপ জমে গেছিল। সাইজেও এগুলা অনেক বড় ছিল। বৃষ্টির কারণে ধানের কোমর ভেঙে হেলে পড়েছে। এই ধানগুলা আর উঠবে না।’
একই এলাকার চাষি মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা চরে সূর্যমুখীর আবাদ করেছিলাম। অনেকের ফসল শ্যাষ (শেষ)। ফেব্রুয়ারি মাসে এই শিল আর বৃষ্টি আমরা আগে দেখি নাই। গাছ-গাছালির অনেক ক্ষতি হইছে।’
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের দলগ্রামের আব্দুর রশীদ জানান, শিলাবৃষ্টিতে ভুট্টা, তামাক ও আদার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
শিল পড়ে ভুট্টার পাতা ছিঁড়ে গেছে। পরে পাতা গজালেও ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা আছে বলে জানান নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের বাহাগিলি ইউনিয়নের ভুট্টাচাষিরা।
শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি বলে জানিয়েছেন রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান। তিনি বলেন, ‘কোনো কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলে যাচাই-বাছাই করে সহযোগিতা করা হবে।’
রংপুর কৃষি অফিসের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুক্রবার শিলাবৃষ্টির পর খোঁজ নিয়েছি। যে সামান্য ক্ষতি হয়েছে তা হিসাবে রাখার মতো নয়। আমাদের কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন। আরও ক্ষতি বের হয় কি না তা পরে জানাতে পারব।’
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু হোসেনও বলেন, ‘শিলাবৃষ্টিতে ঠাকুরগাঁওয়ে তেমন ক্ষতি হয়নি। মাঠ পর্যায়ে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তালিকা প্রস্তুত হলে জানাতে পারব।’
তবে লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামীম আশরাফ জানান, ঝড়-বৃষ্টিতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারা কৃষকদের সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা করবেন।