বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নিবন্ধন ছাড়াই কোটি টিকার বিশেষ ক্যাম্পেইন শুরু

  •    
  • ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০৮:৫৬

শামসুল হক বলেন, ‘শেষদিকে এসে করোনা টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে ভিড় বেড়েছে আগ্রহীদের। সংক্রমণ সম্পর্কে সচেতনও হচ্ছেন তারা। আজ টিকাকেন্দ্রের চাপ কমাতে শুক্রবার ছুটির দিন খোলা হয় টিকাদান কেন্দ্রগুলো।’

করোনাভাইরাস থেকে দেশের মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিতে এক দিনে এক কোটি টিকা দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে টিকাদানের বিশেষ ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। এই টিকা নিতে কোনো ধরনের নিবন্ধন করতে হবে না। এমনকি যারা নিবন্ধন করেও টিকা পাননি, তারও ক্যাম্পাইনের মধ্যমে টিকা নিতে পারবেন।

শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সারা দেশে একযোগে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক।

তিনি বলেন, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ৯টার দিকে টিকাদানের কার্যক্রম চলমান থাকবে। সাধারণত টিকাদান ৩টা পর্যন্ত চললেও এই কর্মসূচি লক্ষ্যপূরণ না হওয়া পর্যন্ত চলবে।

তিনি আরও বলেন, জন্মনিবন্ধন বা কোনো ধরনের কাগজপত্র লাগবে না টিকা নিতে। সেখানে মোবাইল নম্বর দিয়েই টিকা নেয়া যাবে। মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে তাদের তথ্য নথিভুক্ত করে টিকা দেয়া হবে। তাদের একটি করে কার্ড দেয়া হবে। সেটিই হবে তার টিকা নেয়ার প্রমাণ। অবশ্য যাদের আছে তারা প্রয়োজনে নিবন্ধন করে আসতে পারেন। পাশাপাশি নিয়মিত টিকা কেন্দ্রগুলোতে কার্যক্রম চলবে। পর্যাপ্ত টিকার মজুত আছে।

শামসুল হক বলেন, ‘শেষদিকে এসে করোনা টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে ভিড় বেড়েছে আগ্রহীদের। সংক্রমণ সম্পর্কে সচেতনও হচ্ছেন তারা। আজ টিকাকেন্দ্রের চাপ কমাতে শুক্রবার ছুটির দিন খোলা হয় টিকাদান কেন্দ্রগুলো।’

শনিবার সকাল ১০টায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় সূচনা কমিউনিট সেন্টারে চলমান গণটিকা কার্যক্রম পরিদর্শনে যাওয়ার কথা রয়েছে।

টিকাদানের সঙ্গে জড়িত স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, মূলত এই ঘোষণার পর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে টিকাকেন্দ্রে ভিড় বাড়তে থাকে।

স্বাস্থ্য বিভাগের ঘোষণা মতে, টিকা নেয়ার খুদে বার্তা এবং নিবন্ধন ছাড়াই মানুষ এখন টিকার প্রথম ডোজ নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এ জন্য কেন্দ্রে কেন্দ্রে লাইন দিচ্ছেন টিকাপ্রত্যাশীরা।

শ্রমিক ও দিনমজুর শ্রেণির মানুষ বেশি দেখা যাচ্ছে টিকাকেন্দ্রে। এই শ্রেণির মানুষের মধ্যে একটা সংশয় তৈরি হয়েছে যে ২৬ ফেব্রুয়ারির পর তারা করোনার টিকা নিতে পারবেন না।

মঙ্গলবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, এক কোটি ডোজ টিকা দেয়ার পরও টিকাদান কার্যক্রম চলবে। এমনকি প্রয়োজন হলে প্রথম ডোজ টিকাও নেয়া যাবে। তবে সে ক্ষেত্রে কিছুটা দেরি হতে পারে। দ্বিতীয় ডোজ ও বুস্টার ডোজ নিয়ে কিছুটা ব্যস্ত থাকবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

ক্যাম্পেইন না থাকলেও টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ হবে না বলেও জানান তিনি।

টিকার প্রথম ডোজ পরেও দেয়া হবে কি না প্রশ্নে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক বলেন, ‘প্রয়োজনের নিরিখে, খুবই যদি প্রয়োজন থাকে, সে ক্ষেত্রে আমরা আলাদা ক্যাম্পেইন করে দেব।’

যেভাবে সাজানো হয়েছে কেন্দ্রগুলো

এক কোটি টিকা দেয়ার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে তিনটি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা এসব স্থান নির্ধারণ করেছেন। স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও হতে পারে।

পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে দল থাকবে। নির্ধারিত কেন্দ্রের বাইরেও প্রতি উপজেলায় পাঁচটি, প্রতি জেলায় ২০টি করে ভ্রাম্যমাণ দল থাকছে। যেখানে জনসমাগম বেশি সেখানে যেন তারা গিয়ে টিকা দিয়ে আসতে পারে।

ডা. শামসুল হক জানান, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিটি জোনে ৩০টি, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রতিটি জোনে ৪০টি, বরিশাল, সিলেট, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহে প্রতিটি জোনে ৬০টি করে এবং খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও রংপুরের প্রতিটি জোনে অতিরিক্ত ২৫টি করে ভ্রাম্যমাণ দল থাকছে।

ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলার প্রতিটি দল ৩০০ জনকে এবং সিটি করপোরেশনের প্রতিটি দল ৫০০ জনকে টিকা দেবে। সূত্র মতে, ৬ হাজার ৫২টি অস্থায়ী এবং সাত শতাধিক স্থায়ী কেন্দ্রে টিকা দেয়া হবে।

প্রথম ডোজ টিকা চলবে ছোট পরিসরে

১৫ ফেব্রুয়ারি দিনে কোটি ডোজ টিকা দেয়ার ঘোষণা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওই দিন জানানো হয়, ২৬ ফেব্রুয়ারির পর প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হবে না। তবে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার। একবারে বন্ধ না হলেও সীমিত হচ্ছে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া।

হঠাৎ টিকা থেকে ১০ শতাংশ মানুষকে বাদ

করোনভাইরাস প্রতিরোধে ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য নিয়ে প্রথম ডোজ দেয়া শুরু হয়। বাংলাদেশে দুই মাস পর ৮ এপ্রিল শুরু হয় দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার কার্যক্রম। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠী টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা এক বছর পর কমিয়ে ৭০ শতাংশ করা হয়েছে, হঠাৎ ১০ শতাংশ মানুষকে কেন করোনার টিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে, কীভাবে ও কাদের বাদ দেয়া হবে, তা স্বাস্থ্য বিভাগ পরিষ্কার করেনি।

এ বিষয়ে সাংবাদিকরা বারবার প্রশ্ন রাখলেও সঠিক উত্তর পাওয়া যায়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।

প্রথম ডোজের আওতায় ৬৪ শতাংশ মানুষ

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বুধবার পর্যন্ত সারা দেশে ১০ কোটি ৯৫ লাখ ৮১ হাজার ৩৩১ জন করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, যা মোট টার্গেট জনসংখ্যার ৬৪ শতাংশের বেশি। তাদের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৮ কোটি ১৯ লাখ ৪০ জন যা শতাংশ হিসাবে ৪৮ শতাংশ, এরা দ্বিতীয় ডোজের আওতায়। আর বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ৩৫ লাখ ৪৯ হাজার ৮২৬ জন মানুষ।

এ বিভাগের আরো খবর