গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ ঘটনার প্রতিবাদে ৪ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ৪টি দাবির কথা বলেন।
তাদের দাবিগুলো হলো-
১. ধর্ষণে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।
২. বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশপাশের এলাকায় বসবাস করা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৩. ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচার করা।
৪. এ ছাড়া ধর্ষণ ঘটনা সম্পর্কিত সব বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত দাবি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল রাজু।
এদিকে ছাত্রীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ ঘটনায় গ্রেপ্তার তিনজনকে শুক্রবার আদালতে তোলা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশের একটি সূত্র।
এ ঘটনায় নতুন করে আর কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। একই সঙ্গে মামলায় সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারে পুলিশের চিরুনি অভিযান চলছে বলেও জানায় সূত্রটি।
ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বৃহস্পতিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দেয়া আশ্বাসের ভিত্তিতে প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ ঘটনায় পরবর্তী সময়ে করণীয় বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা করেছেন। শুক্রবার বেলা ১১টায় ভিসির রুমে এ সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর, শিক্ষক সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা শুক্রবার বেলা ১১টা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন। শিক্ষার্থী ইমন জানান, বিকেল ৪টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করবেন। পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তারা কী কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পাল জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। এরপর আদালতে তার বক্তব্যও লিপিবদ্ধ করা হয়।
জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নির্মাণাধীন ভবনে বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাজিউর রহমান।
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় প্রক্টরের লিখিত অভিযোগকে মামলা হিসেবে নেয় পুলিশ।
ওই ছাত্রীর একাধিক সহপাঠী জানান, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নবীনবাগের হেলিপ্যাড এলাকায় দাঁড়িয়ে বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলেন ওই ছাত্রী। ওই সময় এক অটোরিকশা থেকে নেমে সাত থেকে আটজন ছাত্র তাদের গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যান। সেখানে বন্ধুকে মারধর করে ওই ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন তারা।