বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সার্চ কমিটির ১০ নাম বঙ্গভবনে, রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত শিগগির

  •    
  • ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২০:৩০

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সার্চ কমিটির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বঙ্গভবন গেটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘১০ জনের নাম জমা দিয়েছে। রাষ্ট্রপতি নামগুলো পর্যালোচনা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন, যা অতিসত্বর প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ হবে।’

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটির বাছাই করা ১০টি নাম রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে জমা দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপ্রধান সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানানো হয়েছে।

তালিকা চূড়ান্ত করার দুই দিন পর বৃহস্পতিবার সার্চ কমিটির প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ছাড়া অন্য সদস্যরা বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে এই তালিকা তুলে দেন। ওবায়দুল হাসান যাননি অসুস্থতার কারণে।

বঙ্গভবনে উপস্থিত ছিলেন সার্চ কমিটির সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক। সঙ্গে ছিলেন কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালন করা মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

সার্চ কমিটির কাছে জমা পড়া তিন শতাধিক নাম প্রকাশ করা হলেও কমিটি কাদেরকে কমিশনে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে, সেটি প্রকাশ করা হয়নি।

বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে সার্চ কমিটির সদস্যরা

সাক্ষাৎ শেষে বঙ্গভবন গেটে সচিব বলেন, ‘১০ জনের নাম জমা দিয়েছে। রাষ্ট্রপতি নামগুলো পর্যালোচনা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন, যা অতিসত্বর প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ হবে।’

কত দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত জানাবেন- এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘সার্চ কমিটি তাদের রিপোর্ট মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিয়েছে। তিনি সেটা গ্রহণ করেছেন। তিনি সেটা একটু এক্সামিন (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) করবেন। দেখে অতিসত্বর উনি নির্দেশনা দেবেন।

‘দুই-এক দিনের মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেটা নোটিফিকেশন করে ফেলা হবে।’

সেটা আজকেই হবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না, মহামান্য রাষ্ট্রপতি বলেছেন, উনি দেখে কুইকলি এটা করে দেবেন।’

এই সাক্ষাতের বিষয়ে বঙ্গভবন থেকে জানানো হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি অনুসন্ধান কমিটির সদস্যদের নিরলস প্রচেষ্টার জন্য তাদের প্রশংসা করেন এবং ধন্যবাদ জানান। তিনি আশা করেন, কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে, যারা আগামীতে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনসমূহ অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে সক্ষম হবে।

অনুসন্ধান কমিটির সদস্যগণ তাদের কার্যক্রমে সাচিবিক সহায়তাসহ সার্বিক সহায়তার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন, সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) সামসুল আরেফিনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তারপর থেকে কমিশন এখন পর্যন্ত শূন্য রয়েছে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে এবার আইন করেছে সরকার। এর আলোকে গঠন করা হয়েছে সার্চ কমিটি। এর আগের দুটি কমিশনও সার্চ কমিটি গঠন করেই করা হয়েছিল, যদিও তখন সুনির্দিষ্ট কোনো আইন ছিল না।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি। এই কমিটি নিজেদের মধ্যে বৈঠক ছাড়াও বিশিষ্টজন ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করে।

কমিটি নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের কাছ থেকে নাম চায়। এমনকি ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ আগ্রহী হলে তারও নাম জমা দেয়ার সুযোগ ছিল।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নাম পাঠানোর সুযোগ ছিল। পরে দুই দিন বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসা পরামর্শের ভিত্তিতে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টা পর্যন্ত আবার নাম পাঠানোর সুযোগ দেয়া হয়।

তবে যে কারণে এই বাড়তি সময় দেয়া হয়, সেটি সফল হয়নি। বিএনপি বর্ধিত সময়েও কোনো নাম প্রস্তাব করেনি।

জমা পড়া ৩২২টি নাম গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়। পরের দিন আট বিশিষ্ট সাংবাদিকের সঙ্গে আরেকটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেও কিছু নাম প্রস্তাব করেন গণমাধ্যমকর্মীরা।

এরপর তালিকা সংক্ষিপ্ত করতে ১৯ ফেব্রুয়ারি বসে আরেকটি বৈঠক, সেখানে তিন শতাধিক মানুষের নাম ছেঁটে ফেলা হয়।

২০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা করার দিন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) সামসুল আরেফিন জানান, আরও দু-একটি বৈঠক করে ১০ জনের চূড়ান্ত তালিকা করে রাষ্ট্রপতির কাছে দেয়া হবে।

তবে পরের দিনের বৈঠকে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করা যায়নি। সেই তালিকায় থাকে ১৩ নাম। পরে ২২ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত করা হয় ১০ নাম।

এর আগেও দুটি নির্বাচন কমিশন সার্চ কমিটি গঠন করে করা হয়েছিল। এই কমিটি রাষ্ট্রপতিকে নাম সুপারিশ করার পর ২০১২ সালে কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ ও ২০১৭ সালে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। দুইবারই বিএনপি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়, সার্চ কমিটিতে নামের তালিকাও জমা দেয়। তবে এবার সার্চ কমিটির বিরোধিতা করছে দলটি।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে আপিল বিভাগ অসাংবিধানিক ঘোষণার পর সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে নির্বাচিত সরকারের অধীনে ভোটের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনে আওয়ামী লীগ। তবে এর প্রতিবাদে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহতের ডাক দিয়ে আন্দোলনে নামে বিএনপি।

ব্যাপক প্রাণহানি ও সহিংস সেই ভোটের পর ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট অংশ নেয় দলীয় সরকারের অধীনেই। তবে সেই নির্বাচনে আগের রাতেই ভোট হয়ে গেছে- এমন একটি অভিযোগ তোলে তারা। এ কারণে দলীয় সরকারের অধীনে ভোটে যেতে চাইছে না তারা।

তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা একটি মীমাংসিত ইস্যু। শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন করতে এবার নির্বাচন কমিশন আইনও করা হয়েছে। আর এই আইনের আলোকেই গঠন করা হয়েছে সার্চ কমিটি।

এ বিভাগের আরো খবর