চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এর আগে ফরেস্ট্রি ইনস্টিটিউটের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের সামনে বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে বিক্ষোভ করে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের সঙ্গে কথা বলতে পরে সেখানে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়াসহ প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা।
বুধবার রাতে চবি ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে জড়ানো দুই পক্ষ হলো শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক উপগ্রুপ ‘সিক্সটি নাইন’ ও ‘এফিটাফ’। বিবাদমান গ্রুপ দুটি সাবেক সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
জানা যায়, বুধবার দুপুরে সিক্সটি নাইনের এক কর্মীকে র্যাগ দেয়ার অভিযোগ উঠে এপিটাফের কর্মীদের বিরুদ্ধে। এর জেরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিক্সটি নাইনের সদস্যরা মাস্টারদা সূর্যসেন হলে হামলা চালায়। এ সময় এপিটাফ গ্রুপের নেতা সাজ্জাদ আমান পিননের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুর করা হয় ফরেস্ট্রি ডিরেক্টর ও হল প্রভোস্টের কক্ষসহ আবাসিক হলের বেশ কয়েকটি কক্ষ। দুই পক্ষের ইট-পাটকেল নিক্ষেপে দশ জনের বেশি আহত হয়।
এ ঘটনার বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মাস্টারদা সূর্যসেন হলের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে ফরেস্ট্রি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা তিনটি দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া, শিক্ষার্থীদের যেসব জিনিসের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে সেগুলোর ক্ষতিপূরণ দেয়া, ছাত্রী হলের সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোসহ ফরেস্ট্রি ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা।
তাদের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, ‘যা দেখেছি তাতে আমি খুব মর্মাহত। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আঙ্গিনায় এ রকম বর্বরতা চলতে পারে, আমার ধারণা ছিল না। ছাত্রদের ওপর কেন আক্রমণ করল, ভাঙচুর চালালো তা আমি বুঝতে পারছি না। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আমিও চাচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা রাতে নিরাপত্তা জোরদার করেছি। কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আমরা চাই না। একসঙ্গে থাকলে একটুআধটু ঝামেলা হতে পারে, তাই বলে কেউ আইন হাতে তুলে নিতে পারে না। তোমাদের সঙ্গে আমরা একমত, যাতে এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ফুটেজ চেক করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তদন্ত কমিটিতে যারা
পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিতে আহবায়ক করা হয়েছে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ডঃ আবুল মনসুরকে। সদস্য হিসেবে করা হয়েছে ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. জরিন আক্তার, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তী, মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রভোস্ট ড. তড়িৎ কুমার বলকে। এছাড়া সহকারী প্রক্টর এস এ এম জিয়াউল ইসলামকে রাখা হয়েছে সদস্য সচিব হিসেবে।