গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং সারা দেশে উপজেলা পর্যায়ে ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে নায্যমূলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পণ্য বিক্রির দাবিতে ১১ দিনের কর্মসূচির ঘোষণা করেছে বিএনপি।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত কর্মসূচি ঘোষণা দেন।
এর আগে সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান আন্দোলনে আসার ইঙ্গিত দেন। বিভিন্ন সময়ে দলটি আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেও রাজপথে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি দলটি।
সারা দেশের মানুষ যেন তাদের প্রয়োজনেই আন্দোলনে যোগ দেন সে বিষয়ে আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সম্প্রতি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন চাল, ডাল, তেল তার সঙ্গে গ্যাস, পানি বিদ্যুতের যে লাগামহীন দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে, এতে প্রতিটি মানুষ আর্থিক দিক দিয়ে আক্রান্ত হচ্ছে।’
প্রত্যেকের আয় কমে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একদিকে করোনার কারণে গত দুই বছরে ব্যবসা-বাণিজ্য একেবারে নিচে নেমে গেছে। অসংখ্য ছোট ব্যবসায়ী পুঁজি হারিয়েছেন। বেশিরভাগ অংশ মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্তে চলে আসছে। কিছু মানুষ আছে মধ্যবিত্তে চলে গেছে, এটা বাস্তবতা।’
বর্তমান সরকারের কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘বাজারে যেমন নিয়ন্ত্রণ নেই, একইভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, উৎপাদনে নিয়ন্ত্রণ নেই। দুর্নীতির কারণে এমন একটা পর্যায়ে চলে গেছে যে, প্রতিটি ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।’ গ্যাস, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পরই দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি।
ব্যাংকের সঙ্গে বাজারের সম্পর্ক আছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাজার তো মুক্ত বাজার। যদি ব্যাংকিং সিস্টেম ভালো থাকে তাহলে ভালো ব্যবস্থা তৈরি হতে পারে। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম যদি সহনীয় পর্যায়ে থাকে তাহলে সেটা মার্কেটকে কম আক্রান্ত করে। এই সরকার সর্বক্ষেত্রে চরম দুর্নীতি করছেন সেই দুর্নীতির প্রভাব বাজারে পড়ছে। যার মাশুল কিন্তু জনগণকে দিতে হচ্ছে।’
প্রতিদিন খবরের কাগজে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের দুর্নীতির খবর ছাপা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এই সবকিছুর সঙ্গে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির একটা সম্পর্ক আছে। যখনই দেশে অস্বাভাবিক অর্থনীতি চলবে তখনই কিন্তু ব্যালেন্স রাখাটা কঠিন হবে।’
বিএনপির ১১ দিনের কর্মসূচি
আগামী ২৬ তারিখে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ। ২৮ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় সদর ও মহানগরে বিক্ষোভ সমাবেশ। ২ মার্চ সারা দেশে সমস্ত জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ। ৫ মার্চ সারা দেশে উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ৷ ৬ মার্চ ছাত্রদলের উদ্যোগে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ। ৮ মার্চ সার দেশে যুবদলের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ৷
৯ মার্চে স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ। ১০ মার্চ কৃষক দলের উদ্যগো সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ।
১২ মার্চ বিএনপির উদ্যোগে সারা দেশে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে হাট, বাজারে সভা, পথ সভা ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি।
এ ছাড়া ১৪ মার্চ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ৷ সর্বশেষ ১৫ মার্চ জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের উদ্যোগে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করবে দলটি।