বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জুতা কারখানায় আগুন: স্বামীর মরদেহের অপেক্ষায় স্ত্রী

  •    
  • ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১০:৫৪

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘নিহতের স্বজন দাবি করা নারী থানায় এসে মরদেহটি শনাক্ত করতে পারেননি। আমরা নিখোঁজের বাবা, মা কিংবা ভাইকে আনতে বলেছি। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে মরদেহটির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

ঢাকার সাভারে জুতার কারখানায় ভয়াবহ আগুনে প্রাণ হারিয়েছেন দুই নারীসহ তিন শ্রমিক। বুধবার রাতেই দুজনের মরদেহ তাদের পরিবার শনাক্ত করতে পারলেও পুড়ে অঙ্গার হওয়া পুরুষ মরদেহটির পরিচয় মেলেনি এখনও।

এদিকে স্বামী নিখোঁজ রয়েছেন এমন দাবি করা কারখানার আরেক শ্রমিকও মরদেহটি শনাক্ত করতে পারেননি। বারবার স্বামীর খোঁজ করে এখন পাগলপ্রায় তিনি।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ওই মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি বলে জানিয়েছে আশুলিয়া থানা পুলিশ।

প্রাণ হারানো দুজন হলেন টাঙ্গাইল জেলার সদর থানার সালাতপাড়া গ্রামের ইমারত হোসেনের ১২ বছরের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার। সে কারখানার পাশে রূপায়ণ মাঠ এলাকার বড় ভাই মো. আরিফের সঙ্গে থাকত।

অন্যজন ৪৫ বছরের শাহনারা বেগম খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার খড়িয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের স্ত্রী। তিনিও রূপায়ণ মাঠ এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।

এদিকে নিখোঁজ সুমন হাওলাদার বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার পূর্ব রহমতপুর গ্রামের বাসিন্দা। স্ত্রী মনিরা আক্তারকে নিয়ে রূপায়ণ মাঠ এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ইউনি ওয়ার্ল্ড ফুটওয়্যার কারখানায় চাকরি করতেন তিনি।

মনিরা আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ছয় মাস আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম আমরা। আমার স্বামী ছয় মাস ধরে ওই কারখানায় কাজ করে। আমি এত দিন বাসায় ছিলাম। এক মাস আগে আমিও স্বামীর সঙ্গে একই কারখানায় চাকরি নেই।

‘বুধবার হঠাৎ কারখানায় আগুন লাগলে সবাই দৌড়াদৌড়ি করে যে যার মতো বাইর হইছে। আমিও ওই সময় বাইরে চইলা আসছি। কিন্তু পরে আমার স্বামীকে আর খুঁইজা পাইনি। রাতে ইউএনও স্যার আসছিল কারখানায়। তখন তাকেও জানাইছি।’

তিনি বলেন, ‘অনেক রাতে আশুলিয়া থানায় গিয়ে একটি পুড়ে যাওয়া লাশ আমাদের শনাক্ত করতে দিছিল পুলিশ। কিন্তু লাশের মুখের অবস্থা দেখে তাকে চেনার উপায় নাই।’

মনিরা আরও বলেন, ‘পুলিশ বলছে, আমার শ্বশুর-শাশুড়ি ও ভাইদের নিয়ে আসতে। তাদের ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা যাবে। কিন্তু আমার স্বামীর বাবা মারা গেছেন। তার মা আর এক বড় বোন থাকেন ভারতে। সুমন যে মোবাইল ব্যবহার করত, সেটাতে তাদের নম্বর ছিল। এখন কি করব আমি বুঝতে পারছি না।’

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কারখানায় আগুনে হতাহতের ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। দুই শ্রমিকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেলেও পুরুষ একজনের মুখমণ্ডল পুড়ে মাংস খসে পড়ায় তার পরিচয় জানা যায়নি। মরদেহ তিনটি রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিহতের স্বজন দাবি করা এক নারী থানায় এসে মরদেহটি শনাক্ত করতে পারেননি। আমরা তার বাবা, মা কিংবা ভাইকে আনতে বলেছি। সে ক্ষেত্রে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে মরদেহটির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

এদিকে মনিরার ভাষ্য মতে সুমনের মা, ভাই ও বোনের খোঁজ না পেলে সে ক্ষেত্রে আইনগত সিদ্ধান্তের বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘তাহলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে আইনগত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

এর আগে বুধবার বিকেল ৫টার দিকে আশুলিয়ার বঙ্গবন্ধু রোডে রূপায়ণ মার্ট নামের ভবনের পাশের টিনশেডের ঘরে আগুন লাগে। কারখানাটি ইউনি ওয়ার্ল্ড ফুটওয়্যার নামের প্রতিষ্ঠানের বলে জানান ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার জহিরুল ইসলাম।

এ বিভাগের আরো খবর