বরগুনার বামনার গোলাঘাটা গ্রামের একটি জমিকে পৈতৃক সম্পত্তি দাবি করে তা ফেরত পেতে অনশন পালন করেছেন তিন বোন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বুধবার বেলা ১১টার দিকে কাফনের কাপড় পরে অনশনে বসেন তারা। তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে অনশন ভাঙান জেলা পুলিশ সুপার।
ওই তিনজন হলেন গোলাঘাটা গ্রামের মৃত আবদুল রশীদের মেয়ে রুবি আক্তার, জেসমিন আক্তার ও মোসা. রোজিনা।
রুবি আক্তার নিউজবাংলাকে জানান, ২০০৩ সালে তাদের বাবা মারা যান। তখন রুবির বয়স ছিল ৭। অন্য দুই বোন ও এক ভাই একেবারে শিশু। পরের বছর এক খালার হাত ধরে সপরিবারে তারা চট্টগ্রাম চলে যান। ২০১৩ সালে তিনি পোশাক কারখানার শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনিই পরিবারের হাল ধরেন।
রুবি জানান, ২০১৪ সালের শেষের দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় ভাই মারা যান। তিন বছর পর অসুস্থ হয়ে মারা যান তাদের মা খাদিজা বেগম। তার মেজো বোন জেসমিন এসএসসি পরীক্ষার্থী ও রোজিনা দশম শ্রেণিতে পড়ে।
রুবি বলেন, ‘২০১৯ সালে এলাকায় ফিরে দেখি পৈতৃক জমি দখল করে নিয়েছেন প্রভাবশালী প্রতিবেশী আবদুল মান্নান, আশরাফ আলী, শাহজাহান ও সামসুজ্জামান। আমি জমি বুঝে পেতে চাইলে তারা বলে আমাদের জমি নাকি নিলামে তারা কিনে নিয়েছেন। পরে উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে জানতে পারি জমির কোনো নিলাম হয়নি।’
রুবির জানান, বিষয়টি বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসককে জানানো হলে তারা বামনা থানা পুলিশের ওসিকে তা দেখতে বলেছেন।
রুবি অভিযোগ করে বলেন, ‘তবে ওসি আমাদের পাত্তাই দেয় না। এখন কী করব আমরা? তাই বাধ্য হয়ে অনশনে বসতে হয়েছে। বাবার জমি থাকতেও এখন নিজভূমে পরবাসী। আমরা অসহায় তিন বোন বাবার জমিটুকু ফেরত চাই। আমাদের দাবি ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ না পাওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলবে।’
এ খবর পেয়ে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক দুপুরের খাবার কিনে নিয়ে তাদের অনশন ভাঙান। তাদের আশ্বস্ত করেন, জমি তাদের হলে তা ফেরত দিতে সব ধরনের সহযোগিতা পুলিশ করবে।
এসপি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করে কাগজপত্র দেখে ব্যবস্থা নেব।’
দখল নয়, জমিটি নিজেদের বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, ‘ওই জমি আমাদের। কাগজপত্র আছে আমাদের কাছে। ওদের কোনো জমি নাই।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। উভয় পক্ষের কাগজপত্র যাচাই করে সমস্যার সমাধান করা হবে।’