বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আড়াই বছরেও পিসিআর ল্যাবের দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউ

  •    
  • ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৬:৪৫

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ল্যাবটি হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন আসে। কিন্তু অনুমোদনের সেই চিঠিতে লিখা হয় ‘হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল’। যে কারণে তারা সেটি গ্রহণ করতে অনীহা প্রকাশ করে। কর্তৃপক্ষ বলছে- তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ’, ‘কলেজ ও হাসপাতাল’ না। এমনকি এই নামে কোনও প্রতিষ্ঠান হবিগঞ্জে নেই। এছাড়া পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য তাদের জায়গাও নেই।

নানা জটিলতার কারণে অনুমোদনের দীর্ঘ আড়াই বছরেও হবিগঞ্জে পিসিআর ল্যাব স্থাপন হয়নি। ল্যাবের জন্য নির্ধারিত ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হলেও গণপূর্ত বিভাগের কাছ থেকে তা গ্রহণ করছে না স্বাস্থ্যবিভাগ। ভবন গ্রহণ নিয়ে জেলা সিভিল সার্জন, হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের মধ্যে চলছে ঠেলাঠেলি।

হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৭ জুলাই স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের এক সভায় হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ২০ শয্যার আইসোলেশন, ১০ শয্যার করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ), নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) বর্জ্য প্ল্যান্ট ও পিসিআর ল্যাবসহ মডার্ন মাইক্রোবায়োলজি ল্যাব, কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে তা বেশি দূর এগোয়নি।

কিন্তু চিঠিতে প্রতিষ্ঠানের নামের জটিলতাসহ কয়েকটি কারণে তা বেশি দূর এগোয়নি।

এদিকে, মহামারি করোনা প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেট থেকে নমুনা পরীক্ষা করে আনতে চার থেকে পাঁচ দিন লেগে যায়। জেলাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ইমারজেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড পেনডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস প্রকল্পের আওতায় পিসিআর ল্যাব জরুরি ভিত্তিতে স্থাপনের পদক্ষেপ নেয়। নিয়োগ দেয়া হয় ৫ জন টেকনিশিয়ানও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ল্যাবটি হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন আসে। কিন্তু অনুমোদনের সেই চিঠিতে লিখা হয় ‘হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল’। যে কারণে তারা সেটি গ্রহণ করতে অনীহা প্রকাশ করে। কর্তৃপক্ষ বলছে- তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ‘শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ’, ‘কলেজ ও হাসপাতাল’ না। এমনকি এই নামে কোনও প্রতিষ্ঠান হবিগঞ্জে নেই। এছাড়াও তাদের পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য তাদের কাছে জায়গা নেই।

পরবর্তীতে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয় হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের সংক্রমণ রোগ প্রতিরোধ ইউনিটে ল্যাব স্থাপন কর হবে। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ল্যাব স্থাপনের ভবন পুনঃনির্মাণের জন্য ৫০ লাখ টাকার টেন্ডার আহবান করে গণপূর্ত বিভাগ। ওই বছরের ১১ মে দরপত্র খোলা হলেও সিলেটের মেসার্স জালাল এন্টারপ্রাইজ কার্যাদেশ পায় গত ৩০ জুলাই।

হবিগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম শামীম নিউজবাংলাকে বলেন ‘ইতোমধ্যে ভবন পুনঃনির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাছ থেকে ভবন বুঝে নিয়েছি। কিন্তু প্রত্যাশিত প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ সেটি গ্রহণ করছে না। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এখন এ ব্যাপারে তারাই সিদ্ধান্ত নেবে।’

শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান সহকারি অধ্যাপক ডা. কান্তিপ্রিয় দাশ নিউজবাংলাকে বলেন ‘২০২১ সালের ৩০ মে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়- সদর হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ ল্যাব স্থাপনের বাস্তবায়ন করবে। সেই সময় টেকনিশিয়ান হিসেবে আমাদের মাইক্রোবায়োলজি ল্যাব থেকে একজন বিশেষজ্ঞ দেয়া হয়। তাই বলে সেই ল্যাব মেডিক্যাল কলেজের আওতায় থাকবে তা নয়।’

অনুমোদনের চিঠিতে প্রতিষ্ঠানের নাম ‘শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল’ উল্লেখ করা হলেও পরে ভবন গ্রহণের জন্য চিঠিতে ‘শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ’ উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ল্যাবের অনুমোদন এবং বাস্তবায়ন করেছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। আমাদের মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের আওতায়। এছাড়া অনুমোদনপত্রে ও চিঠিতে একেক সময় একে নাম আসছে। কখনো মেডিক্যাল কলেজ আবার কখনও মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নামে চিঠি আসছে।’

‘কিছুদিন আগে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে ভবন গ্রহণের জন্য একটি চিঠির অনুলিপি আমাদের কাছে এসেছে। সেখানে লিখা ছিল প্রত্যাশিত প্রতিষ্ঠান ভবন গ্রহণ করবে। এখন কথা হলো আমাদের কাছে সরাসরি কোনো চিঠি আসেনি এবং আমরা প্রত্যাশিত প্রতিষ্ঠান না। এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে চিঠি আসলেও আমরা সেটি গ্রহণ করতে পারব না।

কান্তিপ্রিয় দাশ বলেন, ‘এখানে শুধুমাত্র ভবন গ্রহণ করলেই হবে না। এখনও মেশিনসহ ল্যাব পরিচালনার কোনো যন্ত্রাংশ আসেনি। এছাড়া ল্যাব পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবলের প্রয়োজন, সেটিও নেই। যে ৫ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল তাদেরকেও অন্য জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে। শুধু ভবন নিয়ে আমরা কি করব?’

তবে জনগণের স্বার্থে কাজ করতে চান উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগ থেকে আমাদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয় তাহলে গ্রহণ করব।’

এ বিষয়ে নিউজবাংলাকে জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন মুখলেছুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, ‘এটির সঙ্গে আমরা সরাসরি যুক্ত না। যেহেতু ভবনটি সদর হাসপাতালের সেহেতু এ ব্যাপারে তত্বাবধায়ক মহোদয়ই ভালো বলতে পারবেন।’

তবে ল্যাবের কোনো যন্ত্রপাতি এখনও আসেনি। কবে আসতে পারে সে বিষয়টিও জানেন না তিনি।

জানতে চাইলে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আমিনুল হক সরকার বলেন ‘এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব মেডিক্যাল কলেজের। আমরা কেবলমাত্র ভবনের জায়গা দিয়েছি। আর কোনো সংশ্লিষ্টতা আমাদের নেই।’

এ বিভাগের আরো খবর