চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য বোঝাই কনটেইনারের (এলসিএল) পণ্য খালাসে ভোগান্তি দূর করতে একটি নতুন কনটেইনার ফ্রেইট স্টেশন শেড (সিএফএস) যুক্ত হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরা আমদানি করা পণ্য দ্রুত বন্দর থেকে ছাড়িয়ে নিতে পারবেন। এর ফলে গতি পাবে পোশাক কারখানার পণ্য উৎপাদন।
বন্দরে আমদানি করা গাড়ি রাখার শেডকে এলসিএল কনটেইনার রাখার শেডে রূপান্তরের কাজ ইতোমধ্যেই শেষ করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
আট হাজার ৬৯২ বর্গমিটার আয়তনের এই শেডের ধারণাক্ষমতা এক হাজার একক এলসিএল কনটেইনারের পণ্য। যেখানে প্রতিদিন অন্তত ৫০ একক কনটেইনারে পণ্য খালাস করা যাবে।
চলতি সপ্তাহেই এটির কার্যক্রম চালু হবে বলে জানিয়েছেন বন্দরের সচিবের ওমর ফারুক। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বন্দরের আমদানি করা গাড়ি রাখার এফ শেডকেই এলসিএল কনটেইনারের সিএফএস শেড করার উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। এতে করে বন্দরে পণ্য ডেলিভারিতে আরও গতি পাবে। তৈরি পোশাক খাতেও প্রভাব ফেলবে বন্দরের এই উদ্যোগ।’
বন্দরসংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাকালেও কনটেইনার ওঠা-নামায় বেশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। কনটেইনার ওঠা-নামা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ধরনের কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে বেশ বেকায়দায় ছিল। বন্দরের নতুন এই উদ্যোগের ফলে তা অনেকাংশে দূর হবে।
বিজিএমইএর সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এলসিএল কনটেইনারের বেশির ভাগ পোশাক কারখানার পণ্য থাকে। যার কারণে পণ্য খালাসে দেরি হলে তা উৎপাদনে প্রভাব ফেলত। নতুন শেড চালুর উদ্যোগের ফলে দেশের পোশাক রপ্তানি খাত উপকৃত হবে।’
এলসিএল কী
চট্টগ্রাম বন্দরে দুই ধরনের কনটেইনার ভর্তি হয়ে পণ্য আসে। একটি হচ্ছে এফসিএল অর্থাৎ এক কনটেইনারে একজন আমদানিকারকের পণ্য। আর এলসিএল হচ্ছে, এক কনটেইনারে একাধিক আমদানিকারকের পণ্য। এফসিএল কনটেইনার বন্দর থেকে সরাসরি ডেলিভারির সুযোগ থাকে। কিন্তু এলসিএল কনটেইনারে যেহেতু একাধিক আমদানিকারকের পণ্য থাকে, সে জন্য বন্দরের অভ্যন্তরে কনটেইনার খুলে শুল্ক কর্মকর্তাদের সামনে কায়িক পরীক্ষা করতে হয়। যার জন্য বিশাল আয়তনের খোলা ইয়ার্ডের প্রয়োজন হয়। চট্টগ্রাম বন্দরে ১০টি এলসিএল কনটেইনার শেড রয়েছে। নতুন করে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি।
বন্দরের পরিবহন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি করা পণ্যের বেশির ভাগই তৈরি পোশাক খাতের কাঁচামাল। তাই এই পণ্য খালাস, বিশেষ করে এলসিএল কনটেইনার পণ্য খালাস করা সময় সাপেক্ষ ছিল। বন্দরের এই নতুন উদ্যোগের ফলে এখন খুব তাড়াতাড়ি আমদানি পণ্য খালাস করা সম্ভব হবে। যা রপ্তানি খাতেও সুফল আনবে।